রসুনের অপকারীতা
রসূনের অপকারীতা নিয়ে আলোচনা করা হল
![]() |
| রসুন |
রসুনের অপকারিতা ও সতর্কবার্তা:রসুন যত উপকার ততটা ক্ষতিকর। দিনে দুই কোয়ার বেশি কাঁচা রসুন খাওয়া যাবে না। রান্নায় এটি ব্যবহার হলেও দিনে মাত্র দুই কোয়া রসুন ব্যবহার করতে হবে। যাদের রসুন খাওয়ার ফলে এলার্জি হবার আশঙ্কা থাকে বা হয় তাদেরকে অবশ্যই কাঁচা রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে নিম্নে আলোচনা করা হল ।
যকৃতের ক্ষতি ডায়রিয়া :- রক্ত পরিশোধন, চর্বি ও প্রোটিন বিপাক, শরীর থেকে অ্যামোনিয়া অপসারণ ইত্যাদি হল যকৃতের অন্যতম কাজ। গবেষণা বলে, রসুনে থাকা ‘অ্যালিসিন’ উপাদান যকৃতে বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে যদি মাত্রাতিরিক্ত রসুন খাওয়া হয়। এবং খালি পেটে রসুন খেলে ডায়রিয়া হতে পারে। কারণ রসুনে আছে সালফার যা পেটে গ্যাস তৈরি করে এবং ডায়রিয়া হওয়ার পেছনে এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে।বমি ও বুক জ্বালাপোড়া:- যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, খালি পেটে তাজা রসুন সেবন করলে বুক জ্বালাপোড়া, বমিভাব ও বমি হতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকাল স্কুলের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, রসুনের এমন কিছু উপাদান আছে যা জিইআরডি বা গ্যাস্ট্রোয়েসোফাজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ হওয়ার কারণ।
দুর্গন্ধ রক্ত বন্ধ না হওয়া :-রসুন বেশি খেলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। এর প্রধান কারণ রসুনে থাকা সালফার। অনেকের শরীর থেকে রক্তপাত সহজে বন্ধ হয় না, অতিরিক্ত রসুন খাওয়া তাদের জন্য বিপদজনক। কারণ, রসুন রক্তের জমাট বাঁধার ক্রিয়াকে বাধা প্রদান করে। ফলে রক্তপাত বন্ধ হতে অসুবিধা হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রসুন না খাওয়াই উত্তম।
গর্ভবতী নারীর জন্য নয়:- গর্ভবতী নারীদের রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ এতে ‘লেইবার পেইন’ বা প্রসব বেদনা বেড়ে যেতে পারে। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়েদেরও রসুন থেকে দূরে থাকতে হবে কারণ তা দুধের স্বাদ পাল্টে দেয়।
মাথা ঘোরানো ও ঘাম বাড়ায় :- রসুন বেশি খাওয়ার কারণে রক্তচাপ কমে যেতে পারে, ফলে দেখা দিতে পারে নিম্ন রক্তচাপের বিভিন্ন উপসর্গ। একাধিক ক্লিনিকাল স্টাডিতে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে রসুন সেবন করলে ঘাম বেশি হওয়ার মাথা ঘোরানোর সম্ভাবনা রয়েছে। যাদের রসুন খাওয়ার ফলে মাথা ব্যথার সমস্যা হয়, বমির প্রাদুর্ভাব হয় বা অন্য কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাদের জন্য কাঁচা রসুন না খাওয়াই ভাল। আবার অতিরিক্ত খেলে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হতেও পারে তাই বেশি রসুন খাওয়া ঠিক নয়।
নারী যৌনাঙ্গের প্রদাহ:- নারী যোনাঙ্গে ‘ইস্ট’জনীত প্রদাহের চিকিৎসা চলাকালে রসুন থেকে দূরে থাকিতে হবে। কারণ রসুন নারী যৌনাঙ্গের সংবেদনশীল টিস্যুতে অস্বস্তি সৃষ্টি করে। শিশুকে দুগ্ধদানকারী মায়েদের রসুন না খাওয়াই ভাল। কারণ রসুন খাওয়ার ফলে তা মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুরপাকস্থলীতে ঢুকে শিশুর যন্ত্রণার কারণ ঘটাতে পারে।
দৃষ্টিশক্তির সমস্যা:- অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার কারণে ‘হাইফিমা’ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ ‘আইরিস’ ও ‘কর্নিয়া’র মাঝে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে। ফলাফল হারাতে পারে দৃষ্টিশক্তি।
রসুন ক্রয় ও ব্যবহার:- রসুন নরম হয়ে গেলে বা সবুজ রঙ দেখা দিলে সেই রসুন কিনবেন না। কারণ এসব রসুনের কার্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কেনার সময় মাঝারি আকারের রসুন কিনতে হবে।এছাড়া রসুন বন্ধ পাত্রে না রেখে খোলা পাত্রে রাখা ভাল। ভুলেও রেফ্রিজারেটরে রসুন রাখবেন না। এতে করে রসুন নরম হয়ে যাবে। নরম রসুন স্বাস্থ্যকর নয়। ভাঁজার জন্য বা কারী পেস্টের জন্য রসুন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
