গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তির উপায়। Ways to get rid of gastric ulcer.
গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়ার উপায়
গ্যাস্ট্রিক আলসারের সাথে প্রায় সবাই পরিচিত। এটিকে ডাক্তারি ভাষায় বলে পেপটিক আলসার ডিজিজ কিংবা গ্যাস্ট্রিক আলসার ডিজিজ। কিন্তু সাধারন মানুষের কাছে গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগটি গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা, গ্যাসের ব্যাথা, পেটের আলসার, খাদ্যনালীর ঘা ইত্যাদি নামে পরিচিত। আলসার মূলত দুই ধরণের হয়ে থাকে- পাকস্থলীর ও অন্ত্রের আলসার।
গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগটি অগোছালো জীবন-যাপন, অনিয়মিত খাবার গ্রহণ, খাবার বাছাইয়ে অসতর্কতা ও অজ্ঞতা এ রোগের পিছনের বড় কারন। তাছাড়া শরীরের বাইরের ক্ষত দেখা গেলেও পাকস্থলীর ক্ষত দেখা যায় না। তবে যন্ত্রণা ঠিকই টের পাওয়া যায়। জানা যায়, বিশ্বের ২ দশমিক ৪ থেকে ৬ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ আলসারের সমস্যায় ভুগছেন।
গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগের লক্ষণ
♦♦ বুক জ্বালাপোড়া করা।
♦♦ বুকের পেছনের অংশে বা মেরুদণ্ডে ব্যথা।
♦♦ পেটের উপরের অংশে গরম অনুভূত হওয়া।
♦♦ বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া।
♦♦ মাত্রাতিরিক্ত হেচকি ওঠা।
♦♦ টক বা তিক্ত স্বাদের ঢেকুর তোলা।
♦♦ ক্ষুধামন্দা।
প্রতিকারের উপায়
ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ সেবন ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এনে সহজেই এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চলুন প্রতিকারের কয়েকটি সহজ উপায় জেনে নেই-
১. এলকোহল ও ক্যাফেইন যুক্ত খাবার (যেমন: মদ, চা, কফি ইত্যাদি) খাওয়া যাবে না।
২. ভাজাপোড়া ও মশলাযুক্ত খাবার যত কম খাওয়া যায়।
৩. সামুদ্রিক তৈলাক্ত মাছ বেশি করে খাওয়া। কারন এ ধরনের মাছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড (Omega-three fatty acids) থাকে যা প্রোস্টাগ্লাণ্ডিন(Prostaglandins) তৈরিতে সাহায্য করে। এই প্রোস্টাগ্লাণ্ডিন আলসার শুকাতে অনেক সাহায্য করে থাকে।
৪. ভাতের সাথে অতিরিক্ত লবন (কাঁচা লবন) না খাওয়া। এজন্য যে খাবার লবনে যে অতিরিক্ত সোডিয়াম থাকে তা আলসার তৈরিতে সহায়তা করে।
৫. ভিটামিন-এ, সি ও ই যুক্ত ফল-মূল ও শাক-সবজি বেশি পরিমানে খাওয়া। এ সকল ভিটামিন আলসারের ঘা শুকাতে সাহায্য করে থাকে।
৬. এসপিরিন ও ব্যাথানাশক ওষুধ না খাওয়াই ভালো। এগুলো প্রোস্টাগ্লাণ্ডিনকে(Prostaglandins) কে বাধা দেয়। ফলে নতুন করে আলসার তৈরি হতে পারে।
৭. প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা। এতে অতিরিক্ত এসিড নিষ্ক্রিয় (নিউট্রালাইজ) হয়ে যাওয়ায় আলসারের ঝুঁকি কমে যায়।
৮. বাঁধাকপির জুস
‘র্যাপিড হিলিং অব পেপটিক আলসার ইন পেসেন্টস রিসিভিং ফ্রেশ ক্যাবেজ জুস’ গবেষণায় এমনই তথ্য মিলেছে। এতে অংশ নেন ১৩ জন আলসারের রোগী। এক সপ্তাহ ধরে ৯৪৬ মি.লি. বাঁধাকপির জুস পান করেছিলেন তারা। ফলে তাদের আলসারের সমস্যা একেবারেই কমে যায়।
আরেক ‘ভিটামিন ইউ থেরাপি অব পেপটিক আলসার’ গবেষণায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ১০০ জন। যাদের প্রত্যেকেই আলসারে ভুগছিলেন। তারাও ৭ থেকে ১০ দিন যাবত বাঁধাকপির জুস পান করেছিলেন। অতঃপর গবেষকরা দেখতে পেলেন প্রায় ৮১ শতাংশ সুস্থতার পথে তারা।
নোটঃ আপনার যদি পেটের আলসার সমস্যা হয় তবে আপনি (Gastroenterologist ) সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।