কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার পদ্ধতি

ডেস্ক প্রতিবেদন, ekrishi24: কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে অনেকেই না জানার কারণে লোন গ্রহণ করতে পারে না। কর্মসংস্থান লোন পদ্ধতি একটু ভিন্ন এবং কয়েকটি শর্ত অনুযায়ী মানুষদেরকে লোন প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশের বেকারত্ব দূর করতে এবং আত্মকর্মসংস্থান তৈরীর লক্ষ্যে বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংক বেকারদের বেকারত্ব অভিশাপ থেকে মুক্তি এবং  দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র শিল্পী গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন দিয়ে থাকেন । 



এজন্য আমাদের অনেকেরই বেকারত্ব অভিশাপ ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ব্যাংক থেকে লোন নিতে হয়। লোন নিতে সব ধরনের ব্যাংকে  জামানত রাখতে হয়, যা কর্মসংস্থান ব্যাংকে লাগে না। তাই আজকে আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।



কর্মসংস্থান ব্যাংক কি

কর্মসংস্থান ব্যাংক হলো বাংলাদেশের একটি ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। যা দারিদ্র বিমোচন এ লক্ষ্যে  মহিলাদের ঋণ সহায়তা ও বেকার যুবকদের বেকারত্ব দূর করার জন্য  আত্মকর্মসংস্থান তৈরিতে সহযোগিতা করে থাকে। ১৯৯৮  সালে  কর্মসংস্থান ব্যাংক এর যাত্রা শুরু হয়। 



কর্মসংস্থান ব্যাংক এর মূল উদ্দেশ্য

যেকোনো প্রতিষ্ঠানের তৈরি করার পিছনে একটি মূল উদ্দেশ্য থাকে ঠিক তেমনি কর্মসংস্থান ব্যাংক তৈরির পিছনে এর মূল উদ্দেশ্য হলোঃ

ক) দেশের বেকার যুবকদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন

কর্মকান্ডে সম্পৃক্তকরণ।

খ) আত্মকর্মসংস্থান সৃজন।

গ) আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা।

ঘ) কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণসহ কুটির শিল্পে বিনিয়োগে উৎসাহ প্রদান।

ঙ) দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা।

চ) জিডিপিতে অবদান বৃদ্ধি।



কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঋণের খাতঃ

কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঋণের খাত ৩টি নিম্নে আলোচনা করা হল। যেমনঃ

(ক) উৎপাদনশীল খাত।

(খ) সেবা খাত। 

(গ) বাণিজ্যিক খাত।



(ক) কর্মসংস্থান ব্যাংকের উৎপাদনশীল খাতঃ

উৎপাদনশীল খাত ৬টি নিম্নে আলোচনা করা হল।যেমনঃ

১) মৎস্য চাষ।

২) প্রাণিসম্পদ। 

৩) শিল্প-কারখানা।

৪) ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প।

৫) নার্সারী।

৬) কৃষিজ উৎপাদন।


১) মৎস্য চাষঃ

(i) কার্প জাতীয় (কাতলা, রুই, মৃগেল ইত্যাদি), মনোসেক্স তেলাপিয়া, ভেটকি,চিতল, কৈ, থাই কৈ, শোল,গজার, পুটি ইত্যাদি। 


(ii) ক্যাট ফিস-পাঙ্গাস, বোয়াল, পাবদা, টেংরা, সিং, মাগুর, চিংড়ি, মিশ্র মৎস্য চাষ ইত্যাদি ও রেণু পোনা উৎপাদন (পুকুরে)।


২) প্রাণিসম্পদঃ

(i)  পোল্ট্রি ফার্ম : মুরগী (লেয়ার, ব্রয়লার, কক) খামার, কোয়েল খামার, টারকি খামার, হাঁস খামার, রাজহাঁস খামার, ময়ূর খামার, কবুতর

খামার, তিতির খামার ইত্যাদি। 


(ii) গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ : গরু মোটাতাজাকরণ, ছাগল মোটাতাজাকরণ, ভেড়া/মেষ মোটাতাজাকরণ, মহিষ মোটাতাজাকরণ ইত্যাদি ;


(iii) দুগ্ধ খামার : গরুর দুগ্ধ খামার, ছাগলের দুগ্ধ খামার, ভেড়া/মেষ দুগ্ধ খামার, মহিষ দুগ্ধ খামার ইত্যাদি।


৩) শিল্প-কারখানাঃ

মৎস্য হ্যাচারী, পোল্ট্রি হ্যাচারী, কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা, প্রাণি খাদ্য তৈরির কারখানা, মৎস্য খাদ্য তৈরির কারখানা, চিড়া/মুড়ি কল/


শিল্প, রাইস মিল/চাল কল, বেকারী শিল্প, অয়েল মিল/তেল কল, স’মিল, ফলজাত খাদ্য শিল্প (জ্যাম, জেলি, জুস, আচার, শরবত, সিরাপ,সস), সুষম সার প্রস্তুতকারী শিল্প, আটা, ময়দা, সুজি প্রস্তুতকরণ, ডিজাইন ও ফ্যাশন ওয়্যার, স্টার্চ, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ উৎপাদনকারী শিল্প,


আইসক্রিম ফ্যাক্টরী, গুঁড়া মসলা উৎপাদনকারী শিল্প, সুগন্ধি চাল উৎপাদন, ডাল প্রক্রিয়াজাতকরণ, জর্দা প্রস্তুতকরণ শিল্প, নারিকেল তেল উৎপাদন শিল্প, বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ, রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ, চামড়া শিল্প ইত্যাদি।


৪) ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পঃ

মৃৎ শিল্প, কামারের কাজ, ব্লক-বাটিক/প্রিন্টিং, গ্রামীণ স্যানিটারী ল্যাট্রিন তৈরি, তাঁত/বুনন শিল্প, কাঠের/স্টীলের আসবাবপত্র তৈরি, রেশম বস্ত্র প্রস্তুতকরণ শিল্প, কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি, মোমবাতি/আগরবাতি/গোলাপজল/দাঁতের মাজন/কয়েল তৈরি, বাঁশ ও বেত শিল্প, যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা, ক্ষুদ্র প্রিন্টিং এবং সাইনবোর্ড তৈরি, চামড়াজাত শিল্প, শুটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ, বরফ কল, নকশী কাঁথা তৈরী ইত্যাদি।



৫) নার্সারী।


৬) কৃষিজ উৎপাদনঃ

মাশরুম চাষ, সবজি চাষ, রেশম চাষ, ফল চাষ, মৌমাছি চাষ, পান বরজ/পান চাষ, ফুল চাষ ইত্যাদি।



(খ) কর্মসংস্থান ব্যাংকের সেবা খাতঃ

সেবা খাতসমূহ নিয়ে বিস্তারিত নিম্নে আলোচনা করা হল। যেমনঃ

সেলুন/লন্ড্রি, বিউটি পার্লার/হারবাল ট্রিটমেন্ট, পাওয়ার টিলার, কম্পিউটার সেবা, ফটোকপি সেবা, টিভি/ভিসিআর/বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি/মোবাইল ফোন মেরামত, গ্রামীণ যানবাহন (রিক্সা/নৌকা/রিক্সা-ভ্যান), সেলাই মেশিন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং/গাড়ী মেরামত ওয়ার্কসপ,ডায়াগনস্টিক সেন্টার/ক্লিনিক/দন্ত চিকিৎসা, স্টুডিও, শিক্ষা সেবা (কোচিং সেন্টার/কিন্ডার গার্টেন), ক্যাবল অপারেটরস, জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ, কমিউনিটি সেন্টার, বিনোদন পার্ক, আবাসিক হোটেল, পর্যটন কটেজ, সোলার পাওয়ার, সাইবার ক্যাফে ইত্যাদি।



(গ) কর্মসংস্থান ব্যাংকের বাণিজ্যিক খাতঃ

বাণিজ্যিক খাতসমূহ নিয়ে বিস্তারিত নিম্নে আলোচনা করা হল। যেমনঃ

মুদি/মনিহারী ব্যবসা, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, কাপড়ের ব্যবসা/তৈরী পোষাক ব্যবসা, প্রাণি খাদ্য/মৎস্য খাদ্য বিক্রয়, ধান/চাষ/অন্যান্য কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয়, সার/বীজ/কীটনাশক ব্যবসা, পার্টসের দোকান, ইলেকট্রিক সামগ্রী বিক্রয়, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রয়, ঔষধ ব্যবসা, শুটকি মাছ ব্যবসা, পাথর উত্তোলন ও বিক্রয়, বালি ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসা, জুতার ব্যবসা, ক্রোকারিজ সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়, ভাঙ্গারি ব্যবসা, হার্ডওয়্যার ব্যবসা,হোটেল/রেস্টুরেন্ট ব্যবসা, আসবাবপত্র বিক্রয় ইত্যাদি।



কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঋণ পাওয়ার যোগ্যতাঃ

(ক) বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।


(খ) শাখার অধিক্ষেত্রের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। স্থায়ী বাসিন্দা না হলে শাখার অধিক্ষেত্রের একজন স্থায়ী বাসিন্দাকে ঋণের গ্যারান্টার হতে হবে।


(গ) আবেদনকারীকে বেকার/অর্ধ বেকার হতে হবে।


(ঘ) বয়স সাধারণত ১৮ হতে ৫০ বছর হতে হবে। কর্মসংস্থান ব্যাংকের পুরাতন ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য।


(ঙ) প্রকল্প/প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষমতা থাকতে হবে। 


(চ) প্রকল্প/প্রতিষ্ঠান পরিচালনার বিষয়ে প্রশিক্ষণ/অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।


(ছ) ঋণ ব্যবহারের যোগ্যতাসহ ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা ও আর্থিক আচরণে সুনামের অধিকারী হতে হবে।


(জ) অন্য কোনো ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/এনজিও অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণখেলাপী যোগ্য বিবেচিত হবেন না।




কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঋণসীমাঃ


i) একক ব্যক্তির ক্ষেত্রে - সর্বোচ্চ ৪০.০০ (চল্লিশ) লক্ষ টাকা।


ii) ০৫ (পাঁচ) জনের গ্রুপের ক্ষেত্রে - সর্বোচ্চ ৭৫.০০ (পঁচাত্তর) লক্ষ টাকা।



মৃত্যু ঝুঁকি আচ্ছাদন স্কীমঃ

ক) ব্যাংকের নিজস্ব কর্মসূচীর আওতায় প্রত্যেক ঋণগ্রহীতাকে মৃত্যু ঝুঁকি আচছাদন স্কীমের সদস্য হতে হবে।


খ) প্রত্যেক সদস্যকে ঋণের মেয়াদের ভিত্তিতে নিম্নবর্ণিত হারে অফেরতযোগ্য চাঁদা প্রদান করতে হবে। যেমনঃ


০১ (এক) বছর পর্যন্ত ০.৪০% চাঁদার হার।

০১ (এক) বছরের ঊর্ধ্বে তবে ০২ (দুই) বছর পর্যন্ত ০.৫০% চাঁদার হার।

০২ (দুই) বছরের ঊর্ধ্বে ০.৬০% চাঁদার হার।



গ) ঋণের মেয়াদকালে ঋণগ্রহীতার মৃত্যু হলে এবং হিসাবটি নিয়মিত থাকলে অবশিষ্ট সমুদয় পাওনা এ স্কীম হতে সমন্বয় করা হবে। মৃতের উত্তরাধিকারীগণকে ঋণের কোনো দায় বহন করতে হবে না, তবে তারা কোনো আর্থিক সুবিধা পাবেন না।




ঋণের মেয়াদ ও পরিশোধসূচীঃ

ক) সাধারণত: ২ বছর। তবে প্রকল্পের প্রকৃতি, আকার, ঋণের পরিমাণ, সম্ভাব্য মুনাফা ইত্যাদি বিবেচনা করে ঋণের মেয়াদ ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছর হতে পারে। কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনে ঋণ সহায়তা কর্মসূচীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ০৮ বছর।


খ) উৎপাদিত পণ্য/সেবার বিপণন/বাজারজাতকরণের উপর ভিত্তি করে মাসিক/ ত্রৈমাসিক/ষান্মাসিক/এককালীন কিস্তিতে ঋণের পরিশোধসূচী নির্ধারণ করা হয়।


গ) মেয়াদপূর্তির আগে ঋণ পরিশোধ করে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে নিয়মানুযায়ী Early Settlement Fee (ESF) প্রদান করতে হবে।



ঋণ প্রস্তাবের  কাগজপত্র (সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) ঃ

(০১) প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকের ঋণ প্রদানকারী শাখায় নির্ধারিত ফরমে ঋণের আবেদন।


(০২) আবেদনকারীর সদ্য তোলা ০২ (দুই) কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি।


(০৩) গ্যারান্টারের সদ্য তোলা ০২ (দুই) কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি।


(০৪) আবেদনকারী ও গ্যারান্টারের জাতীয় পরিচয়পত্রের উভয় পিঠের সত্যায়িত ফটোকপি (বাধ্যতামূলক নয়)।


(০৫) উদ্যোক্তা/গ্যারান্টারের স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র হিসেবে উদ্যোক্তা/গ্যারান্টারের দলিল/পর্চার ফটোকপিসহ স্থানীয় ইউ.পি চেয়ারম্যান/পৌর মেয়র/ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলার কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্ব সনদপত্র।


(০৬) শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।


(০৭) প্রশিক্ষণ/অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।


(০৮) ভাড়া/লীজ-এর ক্ষেত্রে প্রমাণপত্র/ব্যবস্থাপকের প্রত্যয়নপত্র।


(০৯) (ক) প্রকল্পস্থানের মালিক গ্যারান্টার হলে গ্যারান্টারের সম্মতিপত্র।


(খ) ভাড়া/লীজকৃত হলে ভাড়া চুক্তিপত্র/লীজপত্রের কপি।


(১০) যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ঋণের ক্ষেত্রে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ০৩টি দরপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)। 


(১১) ১,০০,০০০/- টাকার ঊর্ধ্বে ঋণের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্সের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)। 


(১২) ড্রাগ লাইসেন্সের কপি (ঔষধের দোকানের ক্ষেত্রে)। 


(১৩) প্রকল্প/প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয় বিবরণী।




ঋণ প্রস্তাবের দলিলপত্র/কাগজপত্রঃ

(i) ১,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত।


৫,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত ঋণ জামানতবিহীন।


(ক) ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে এস.এ/আর.এস খতিয়ান, সর্বশেষ জরিপের খতিয়ান এবং ঐ খতিয়ান নিজের নামে না থাকলে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট।


(খ) কবলা/দানপত্র/লীজ/দেওয়ানী আদালতের ডিক্রিসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে।


০১) কবলা/দানপত্র/লীজপত্র/দলিলের আসল কপি, দেওয়ানী আদালতের রায়/ডিক্রির সহিমোহর নকল।


০২) কবলা/দানপত্রসূত্রে মালিকানাপ্রাপ্ত হলে দলিলগ্রহীতার নামের খতিয়ান। দলিলগ্রহীতার নামের খতিয়ান না থাকলে বিক্রেতা/দানপত্র দাতার নামের খতিয়ান।


০৩) আদালতের ডিক্রিসূত্রে মালিকানাপ্রাপ্ত হলে সেক্ষেত্রে ডিক্রিসূত্রে খতিয়ানের আসল অথবা সহিমোহর নকল।



(ii) ১,০০,০০০/- টাকার ঊর্ধ্বে সকল ক্ষেত্রে।


(ক) ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে।


০১) এস.এ/আর.এস খতিয়ান, সর্বশেষ জরিপের খতিয়ান এবং ঐ খতিয়ান নিজের নামে না থাকলে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ও মিউটেটেড


খতিয়ান (ডি.সি.আর কপিসহ) এবং হাল নাগাদ খাজনার রশিদ। ওয়ারিশ সার্টিফিকেট আদালত ব্যতীত ইউনিয়ন/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত হলে তাও এ ক্ষেত্রে গ্রহণ যোগ্য হবে।


০২) ঋণগ্রহীতা এবং গ্যারান্টার উভয়েরই জাতীয় পরিচয়পত্র।



(খ) কবলা/দানপত্র/লীজ/দেওয়ানী আদালতের ডিক্রিসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে।


০১) কবলা/দানপত্র/লীজপত্র/দলিলের মূল দলিলপত্র, দেওয়ানী আদালতের রায়/ডিক্রির সহিমোহর নকল।


০২) কবলা/দানপত্রসূত্রে মালিকানাপ্রাপ্ত হলে অন্যান্য খতিয়ানের সাথে দলিলগ্রহীতার নামে মিউটেটেড খতিয়ান (ডি.সি.আর কপিসহ)।


০৩) আদালতের ডিক্রিসূত্রে মালিকানাপ্রাপ্ত হলে সেক্ষেত্রে মিউটেটেড খতিয়ানের (ডি.সি.আর কপিসহ) মূল দলিলপত্র অথবা সহিমোহর নকল।



(iii) ৫,০০,০০০/- টাকার ঊর্ধ্বে প্রকল্প ও চলতি মূলধন ঋণের ক্ষেত্রে।


০১) সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে প্রকল্প স্থাপনের অনুমতিপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।


০২) বিসিক কর্তৃক বরাদ্দকৃত জমির ক্ষেত্রে মূল বরাদ্দপত্র, দখলী সত্ত্ব বুঝিয়ে দেয়ার পত্র, হালনাগাদ কিস্তি পরিশোধের প্রত্যয়ন এবং ঋণ বিতরণের পূর্বে সমূদয় কিস্তি পরিশোধপূর্বক প্রয়োজনীয় সম্পাদিত মালিকানা দলিল।


০৩) আয়কর পরিশোধের দালিলিক প্রমাণ (যদি আয়কর দাতা হন)।


০৪) সরকার বা অন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বরাদ্দকৃত জমির ক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয়/সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হতে ব্যাংকের নিকট জমি বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহণে অনাপত্তিপত্র।


০৫) নিজস্ব বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের উৎস সম্পর্কে ঘোষণা।


০৬) প্রকল্প জমির হাতে আঁকা রুট-ম্যাপ।


০৭) হাতে আঁকা প্রকল্পের সাইট প্ল্যান/লে-আউট প্ল্যান। 


০৮) প্রজেক্ট প্রোফাইল, যার মধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্য ডিজাইন/ড্রইং, কারিগরি ব্যবস্থাপনা, মোট প্রকল্প ব্যয়, নির্মাণ খরচের বিস্তারিত হিসাব,আর্থিক বিশ্লেষণ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে ১০.০০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রকল্প ব্যয়ের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা নিজে এবং ১০.০০ (দশ) লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে প্রকল্পের ক্ষেত্রে পুরকৌশলীর সহায়তা নেয়া যেতে পারে। 


০৯) প্রকল্পের প্রয়োজনীয় আমদানীযোগ্য বৈদেশিক যন্ত্রপাতির জন্য স্থানীয় ইন্ডেন্টার কর্তৃক দাখিলকৃত ০৩টি প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র (ক্যাটালগ, বিস্তারিত স্পেসিফিকেশনসহ)।


১০) স্থানীয় যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে ০৩টি প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র (প্রয়োজনবোধে ক্যাটালগসহ)।


১১) পিডিবি/ডেসা/ডেসকো/আরইবি/গ্যাস ট্রান্সঃ এন্ড ডিষ্ট্রিঃ কোঃ হতে বিদ্যুৎ/গ্যাস সরবরাহের সম্মতিপত্র (প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে)।


১২) পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে ছাড়পত্র (প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে)।




(iv) ঋণ মঞ্জুরীর পর কিন্তু বিতরণের পূর্বে দলিলপত্রঃ

হাল নাগাদ খাজনা পরিশোধের রশিদ।


ঋণের আবেদন ফরমের মূল্য ও আবেদন নিষ্পত্তিকরণ।


(ক) আবেদনকৃত ঋণের পরিমাণ ২,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত হলে আবেদন ফরমের মূল্য (টাকা) ৩০০/-টাকা।

আবেদনকৃত ঋণের পরিমাণ ২,০০,০০১/- হতে ৪,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত হলে আবেদন ফরমের মূল্য (টাকা) ৪০০/-টাকা। 

আবেদনকৃত ঋণের পরিমাণ ৪,০০,০০০/- টাকার ঊর্ধ্বে হলে আবেদন ফরমের মূল্য (টাকা) ৫০০/-টাকা।



(খ) বিবেচ্য ঋণের পরিমাণ শাখার ঋণ মঞ্জুরি ক্ষমতার মধ্যে হলে আবেদনপত্র গ্রহণের সর্বোচ্চ ১০(দশ) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে;


(গ) বিবেচ্য ঋণের পরিমাণ শাখা ব্যবস্থাপকের ঋণ মঞ্জুরী ক্ষমতার অধিক হলে আবেদনপত্র গ্রহণের সর্বোচ্চ ১০(দশ) দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং সুপারিশসহ প্রস্তাব আঞ্চলিক কার্যালয়ে/ প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।


(ঘ) আঞ্চলিক কার্যালয়ে/প্রধান কার্যালয়ে প্রাপ্ত ঋণ প্রস্তাব ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মঞ্জুরী ক্ষমতা পর্যন্ত নিষ্পত্তিযোগ্য হলে প্রস্তাব প্রাপ্তির সর্বোচ্চ ০৫ (পাঁচ) দিন এবং পরিচালনা বোর্ডের মঞ্জুরী ক্ষমতার মধ্যে নিষ্পত্তিযোগ্য হলে প্রস্তাব প্রাপ্তির সর্বোচ্চ ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে।



ঋণের চার্জ ডকুমেন্টস্স কল ঋণের ক্ষেত্রেঃ

(ক) ঋণগ্রহীতা ও গ্যারান্টার কর্তৃক স্বাক্ষরিত ডবল পার্টি ডিপি নোট। 


(খ) ডিপি নোট ডেলিভারী লেটার।


(গ) প্রকল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সকল অস্থাবর সম্পত্তি/মালামাল ব্যাংকের নিকট হাইপোথিকেশনে রাখার জন্য ঋণগ্রহীতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হাইপোথিকেশন ডিড।


(ঘ) ঋণগ্রহীতার সম্পত্তির মূল দলিল/দলিলপত্র জমা রাখার জন্য ঋণগ্রহীতার স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি; অথবা তৃতীয় পক্ষের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি।


১.০০ (এক) লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে ঋণের ক্ষেত্রেঃ


(ক) ঋণগ্রহীতার সম্পত্তির মূল দলিল/দলিলপত্র জমা রাখার জন্য ঋণগ্রহীতার স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি। অথবা তৃতীয় পক্ষের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি ও গ্যারান্টারের সম্পত্তির মূল দলিল/দলিলপত্র জমা রাখার জন্য তার স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি।


৫.০০ (পাঁচ) লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে ঋণের ক্ষেত্রেঃ


(ক) নির্দায়ী সনদপত্র।


(খ) ঋণগ্রহীতার সম্পত্তির মূল দলিলপত্র এবং রেজিস্টার্ড বন্ধকি দলিল অথবা তৃতীয় পক্ষের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি ও গ্যারান্টারের সম্পত্তির মূল দলিলপত্র এবং রেজিস্টার্ড বন্ধকি দলিল।


(গ) অপ্রত্যাহারযোগ্য আমমোক্তারনামা।



স্ট্যাম্প খরচ (ঋণগ্রহীতা বহন করবেন)


বলবৎ স্ট্যাম্প এ্যাক্ট অনুযায়ী চার্জ ডকুমেন্টে নিম্নরূপ মূল্যমানের স্ট্যাম্প ব্যবহৃত হবে। তবে মূল্যমান পরিবর্তনযোগ্য।


(i) ডিপি নোট / ডবল পার্টি ডিপি নোটঃ


(ক) ২,০০০/- টাকা মূল্যমানের জন্য ১০/- টাকা।


(খ) ২,০০০/- টাকার ঊর্ধ্বে ১০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের জন্য ২০/- টাকা।


(গ) ১০,০০০/- টাকার ঊর্ধ্বের মূল্যমানের জন্য ৫০/- টাকা।


(ii) ডিপি নোট ডেলিভারী লেটার : স্ট্যাম্পবিহীন।


(iii) হাইপোথিকেশন ডিড : ৩০০/- টাকার Adhesive Stamp যুক্ত।


(iv) মূল দলিল জমা রাখার স্মারকলিপি : ৩০০/- টাকার Adhesive Stamp যুক্ত।


(v) তৃতীয় পক্ষের গ্যারান্টি : ৩০০/- টাকার Adhesive Stamp যুক্ত।


(vi) রেজিস্টার্ড বন্ধকি দলিল ও আমমোক্তারনামা : বলবৎ রেজিস্ট্রেশন আইন অনুসারে।




সতর্কতাঃ

গ্রাহকগণকে নিম্নোক্ত বিষয় সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।


(ক) ঋণের টাকা নগদে প্রদান করা হয় না। কেবল ঋণগ্রহীতার নামে Order চেক অথবা A/C Payee চেকের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।


ঋণের টাকা সার্ভিসিং ব্যাংক থেকে বুঝে নিতে হবে।


(খ) চেকের পিছনে স্বাক্ষর দিয়ে চেক নিজে নগদায়ন করতে হবে। অন্যের কাছে চেক হস্তান্তর করা যাবে না।


(গ) রশিদ ছাড়া কোনো প্রকার লেনদেন করা যাবে না।


(ঘ) ঋণের জন্য সরাসরি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক/কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। কোনো তৃতীয় পক্ষ বা ব্যক্তির সাহায্য নেয়া যাবে না।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url