এবামেকটিন গ্রুপের কীটনাশক পরিচিতি | কীটনাশক

এবামেকটিন গ্রুপের কীটনাশক পরিচিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা


এবামেকটিন কীটনাশক হল বায়ো-কীটনাশক, যা বিভিন্ন কীটনাশকের সাথে মিশ্রিত হতে পারে বা সামান্য পরিমাণে ডিটারজেন্ট যোগ করে আর্দ্র এবামেকটিন পাউডারকে সহায়তা করে এবং কার্যকারিতা উন্নত করে তার আঠালোকে বৃদ্ধি করে। এবং এটি ছত্রাকনাশকের সাথে মিশ্রিত করা যায় না।কীটনাশক ও মাকড়নাশক এবং  নেমাটোডনাশক আক্রান্ত সকল ফসলের জন্য ব্যাবহার করা যায়। 

এবামেকটিন গ্রুপের কীটনাশক পরিচিতি,এটা স্পর্শক ও পাকস্থলীর কার্যকরী বিষক্রিয়া সম্পন্ন কীটনাশক ও মাকড়নাশক এবং নেমাটোডনাশক আক্রান্ত সকল ফসলের জন্য।
এবামেকটিন গ্রুপের কীটনাশক পরিচিতি


এবামেকটিন কীটনাশক পরিচিতিঃ

এটা একটি স্থায়ীভাবে অনুপ্রবেশ ক্ষমতাসম্পন্ন স্পর্শক ও পাকস্থলীর কার্যকরী বিষক্রিয়া সম্পন্ন কীটনাশক ও মাকড়নাশক এবং নেমাটোডনাশক আক্রান্ত সকল ফসলের জন্য।


ফসলের প্রয়ােগ ক্ষেত্রঃ

ধান,চা,কচু, লিচু, বড়ই, নারিকেল, বেগুন, মরিচ ঢেঁড়স পাট, শসা, পটল, তরমুজ ও কুমড়া জাতীয় ফসলের জন্য।


পোকা-মাকড়ে প্রয়ােগক্ষেত্রঃ

লেপিডোপেটেরা, ডিপ্টেরা, হোমোপেটেরা, কোলিওপেটের পোকামাকড়, মাকড়সার মাইট, মরিচা মাইট সহ বিভিন্ন পোকামাকড়কে মেরে ফেলতে পারে এবং বিভিন্ন ধরণের পরজীবী নেমাটোডকে মেরে ফেলতে কার্যকর।আবার যেমনঃ বাদামী গাছ ফড়িং,পামরী পোকা। লাল মাকড়,মাকড়, বলওয়ার্ম,জেসিড, জাব পোকা ও মশা নিধন করে থাকে। 


কেন ব্যবহার করবেন?

স্পর্শ ক্রিয়া সম্পন্ন কীটনাশক বলে সরাসরি শরীরের সংস্পর্শে আসা মাত্র পোকা মারা যায়।

পাকস্থলীয় ক্রিয়া সম্পন্ন কীটনাশক তাই স্প্রে করা পাতা, ডগা ইত্যাদি থেকে রস খাবার সাথে সাথে পোকা মারা যায়।

যেহেতু একটি ট্রান্সলেমিনার গুণসম্পন্ন মাকড়নাশক তাই পাতার উপরের স্তরে পড়লে তা পাতার এপিডার্মিস ভেদ করে পাতার নীচের স্তরে পৌঁছাতে সক্ষম, ফলে পাতার উল্টো পাশে অবস্থানরত মাকড় সহজে মারা যায়। 

এটি মাকড় দমনে সবচেয়ে দ্রুত কাজ করে এবং দীর্ঘদিন এর কার্যকারীতা স্থায়ী থাকে।


এবামেকটিন ব্যবহারের সুবিধাঃ

এটি ব্যবহারে মরিচ গাছের পাতা কুঁকড়ে যাওয়া রোধ করে এবং অন্যান্য ফসল কীট ও মাকড়ের আক্রমণ হতে রক্ষা করে।

সবজির মাকড় ও শোষক পোকা দমনে অত্যন্ত কার্যকর। ও এটি বিভিন্ন ফসলের পাতা ও ডগা কুঁকড়ে যাওয়া দমনে অত্যন্ত কার্যকারী।

সুড়ঙ্গ সৃষ্টিকারী পোকা (Leaf Miners) দমনেও কার্যকরী।এবং মরিচ, ক্যাপ্সিকাম, পেয়ারাসহ যেকোন গাছে স্প্রে করা যায়।

এটি দ্বারা বীজ শোধনের মাধ্যমে নেমাটোড নিয়ন্ত্রণ (Control) করা যায়।
 
উদ্ভিদের পৃষ্ঠের উপর স্প্রে করা ওষুধগুলি দ্রুত পচে যেতে পারে, এটি শিকারিদের থেকে নিরাপদ, পরিবেশের পক্ষে কম দূষণ এবং উদ্ভিদ ১০ গুণ বেশি ব্যবহারের পরেও আঘাতের কারণ হতে পারে না। 

এবামেকটিন আস্তে আস্তে কীটপতঙ্গগুলি মেরে ফেলে যা ধীরে ধীরে চলতে শুরু করে যা খাবারের পড় থেকে মৃত্যুর পর্যন্ত ২ থেকে ৪ দিন সময় লাগে। তাই কৃষকরা মনে করেন যে এর কার্যকারিতা ভালো নয়।

আসলে ওষুধটি উচ্চমাত্রায় বিষাক্ত যে বিষাক্ততা কমাতে বিভিন্ন কীটনাশক সক্রিয় উপাদানগুলির বিষয়বস্তুকে খুব কম রাখে, তবে সুরক্ষার ব্যবহার এখনও প্রয়োজন।



বাজারে যে নামে পাওয়া যায়ঃ


বালাইনাশকের নাম গ্রুপের নাম কোম্পানীর নাম প্রয়ােগ মাত্রা
ভার্টিমেক ১.৮ ইসি এবামেকটিন সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেড প্রতি লিটার পানিতে ১.২৫ মিলি
এবম ১.৮ ইসি এবামেকটিন ম্যাকডোনাল্ড ক্রপ কেয়ার লিমিটেড ৫০০ মিলি/হেঃ
সানমেকটিন ১.৮ ইসি এবামেকটিন অটো ক্রপ কেয়ার লিমিটেড ১০ লিটার পানিতে ১২ মিলি
এমবুশ ১.৮ ইসি এবামেকটিন হেকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেড ১.২৫ লিঃ/হেঃ
লাকাদ ১.৮ ইসি এবামেকটিন ইনতেফা প্রতি লিটার পানিতে ১.২মিলি
একামাইট ১.৮ ইসি এবামেকটিন এসিআই ফর্মুলেশনস লিমিটেড ১০ লিটার পানিতে ২৫ মিলি
রেক্সিমেকটিন ১.৮ ইসি এবামেকটিন রেক্সিমকো ইনসেক্টিসাইডস লিমিটেড ৫০০ মিলি/হেঃ
ভেকটিন ১.৮ ইসি এবামেকটিন অরণ্য ক্রপ কেয়ার লিমিটেড ১.২০ মিলি/প্রতি লিটার পানি
লিকার ১.৮ ইসি এবামেকটিন করবেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড প্রতি ১ লিটার পানিতে ২ মিলি
টপটিন ১.৮ ইসি এবামেকটিন ইস্ট ওয়েস্ট কেমিক্যালস লিমিটেড ১.০০ লিঃ/হেঃ




বালাইনাশক প্রয়োগ মাত্রাঃ

অনুমোদিত প্রয়োগমাত্রা প্যাকেটের গায়ে থেকে ভালো ভাবে দেখে নিতে হবে। 


সাবধানতাঃ

প্রয়ােগ করার ১৪-২১ দিনের মধ্যে গবাদি পশু, হাঁস ও মুরগী ক্ষেতে প্রবেশ করতে দিবেন না এবং উক্ত সময়ের মধ্যে ফসল তুলবেন না বা খাবেন না।ব্যবহারের পূর্বে বোতলের গায়ে লি­খিত নির্দেশাবলী ভালভাবে পড়ুন এবং মেনে চলুন।



যোগাযোগঃ

কৃষি বিষয়ক যে কোন সমস্যার সমাধান ও ফসলের রােগবালাই এবং পােকামাকড় দমনে সঠিক পরামর্শ দিতে আপনার পাশে রয়েছে ekrishi24.অথবা নিকটস্থ “কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র (ফিয়াক)” অথবা “উপ সহকারী কৃষি অফিসার” এর সাথে যোগাযোগ করুন।
Next Post Previous Post
2 Comments
  • Unknown
    Unknown ৫ এপ্রিল, ২০২২ এ ৭:৫০ PM

    লেখাগুলো অনেক সুন্দর ছিলো, পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

  • কৃষি কথা
    কৃষি কথা ২১ জুন, ২০২৩ এ ৭:১০ AM

    এবামেকটিন ট্রান্সল্যামিনার গুনসম্পন্ন লিখেছেন৷ এ বিষয়ে কি আপনি নিশ্চিত?

Add Comment
comment url