তরমুজ চাষ কিভাবে শুরু করবেন? জানুন তরমুজ চাষ পদ্ধতি
তরমুজ চাষ পদ্ধতি ( Watermelon cultivation method):
ekrishi24: তরমুজ দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও অসাধারণ। তাই আমাদের দেশে
তরমুজ একটি জনপ্রিয় ফল। তরমুজের ভেতরের মাংসল অংশ বেশ মিষ্টি ও
সুস্বাদু। এছাড়াও তরমুজ গরমের সময় অত্যন্ত তৃপ্তিদায়ক, সুস্বাদু ও
তৃষ্ণা নিবারক একটি ফল। তাছাড়া গরমের দিনে ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রচুর
পরিমাণে লবণ ও পানি বেরিয়ে যায়, যা পূরণ করতে সাহায্য করে তরমুজ। কেননা
তরমুজে প্রায় ৯৬ ভাগই জল এবং প্রচুর খনিজ লবণ থাকায় দেহে লবণ ও জলের
ঘাটতি সহজেই পূরণ করে থাকে। তাছাড়াও তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি
ও ভেষজগুণ। যার ফলে বাজারে অনেক চাহিদা রয়েছে। আর এই চাহিদা থাকার কারণে
চাষিরাও তরমুজ চাষে বেশ আগ্রহী। কেননা সঠিক পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ
করলে চাষিরা বেশ লাভবান হন। তাই বাজারের চাহিদা অনুযায়ী জাত নির্বাচন করে
তরমুজের চাষ করতে হবে। তাহলে আসুন, আমরা জেনে নেই কীভাবে এই উপকারী ফলটি
অথাৎ তরমুজ চাষ করতে হয়।
![]() |
| তরমুজ চাষ |
তরমুজ চাষে জলবাযু ও মাটি (Soil and Climate):
শুষ্ক,উষ্ণ ও প্রচুর সূর্যের আলো পায় এমন স্থানে তরমুজ চাষ সবচেয়ে ভালো
হয়ে থাকে। ফলটি ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারে না। তরমুজ চাষের গড় তাপমাত্রা ২৫০
সেলসিয়াস ও ফল পাকার সময় ২৮০ থেকে ৩০০ সেলসিয়াস তাপমাত্রা সর্বাপেক্ষা উপযোগী।
ফল পাকার সময় সূর্যালোকের অভাব হলেই ফলের স্বাদ অর্থাৎ মিষ্টতা ও ঘ্রাণ নষ্ট
হয়ে যায়। তবে অধিক আর্দ্রতা তরমুজ চাষের জন্য ক্ষতিকর হয়ে থাকে। উর্বর
দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য খবই উত্তম। সহজে পানি
নিষ্কাশন করা যায় এমন সুবিধাযুক্ত জমি তরমুজ চাষের জন্য বেশি
উপযোগী।
তরমুজের জাতের নাম
দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় তরমুজের জাত হচ্ছে সুগার বেবি। জাতটি বারো মাসই
উৎপাদন করা যায়। তাছাড়াও জাম্বু, গ্লোরি, ড্রাগন কিং (সুপ্রিম সীড),
ফিল্ডমাষ্টার, ওয়াল্ড কুইন, বিগ টপ, পাকিজা, সুইট ক্রাঞ্চ (এ আর মালিক), সুইট
গ্রীন, সুইট ড্রাগন, গ্রীন ডায়মন্ড, সুগার কিং, কালো মানিক (ইস্পাহানি), ডক্টর
সুপার, ব্ল্যাক জায়ান্ট (লাল তীর), ড্রাগন, সুপার ড্রাগন (সিনজেন্টা), পাওয়ার,
উইনার, বিগ ফ্যামেলি, পাগলা জাগুয়া(ইউনাইটেড সিড) ইত্যাদি৷ এছাড়াও ছোট আকারের
বারোমাসি তরমুজের বেশ কয়েকটি জাতের বীজ এ দেশে এখন পাওয়া যাচ্ছে। এসব
জাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্লাক বেবী, ব্লাক প্রিন্স, ব্লাক বক্স, জেসমিন ১,
জেসমিন ২, জেসমিন ৩ ইত্যাদি। এসব জাত বছরের যে কোনো সময় চাষ করা যায়।
তরমুজ চাষের জন্য জমি তৈরিঃ
ভালো ফলন পেতে হলে প্রয়োজনমতো ২-৩ টি চাষ ও মই দিয়ে তরমুজ চাষের জন্য
জমি তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে সাধারণত বড় ট্রাক্টর দিয়ে এক চাষ ও পাওয়ার টিলার
দিয়ে দুই চাষ দিতে পারেন ৷ জমি তৈরির পর মাদা প্রস্তুত করে নিতে হবে। মাদাতে
সার প্রয়োগ করে চারা লাগানো উচিত।
তরমুজ চাষের জন্য বেড তৈরিঃ
তরমুজ চাষের জন্য বেড তৈরির পর এক একটি বেডের দৈর্ঘ্যে ৮ ফুট, প্রস্হ ৮
ফুট করে এবং উচ্চতা হবে কমপক্ষে ৬ ইঞ্চি৷ এভাবে পরপর বেড তৈরি করতে হবে৷ এরুপ
পাশাপাশি দুটি বেডের মাঝখানে ১.৫ ফুট ব্যাসের সেচ ও নিকাশ নালা থাকবে৷
তরমুজ চাষের জন্য মাদা তৈরিঃ
তরমুজ চাষের জন্য মাদার আকার হবে গোলাকার, যার ব্যাস ২০ ইঞ্চি ও গভীরতা
২০ ইঞ্চি৷ নালা থেকে ১ ফুট ভিতরে মাদা তৈরি করে সেখান থেকে ৬ ফুট দুরে আরেকটি
মাদা তৈরি করতে হবে৷ এভাবে একটি বেডে ৬ ফুট অন্তর ২ টি সারি হবে৷ মাদার উপরের
মাটির সাথে ভালো করে সার মিশিয়ে উপরের মাটি গর্তের নিচে,এবং নিচের মাটি গর্তের
উপরে দিতে হবে৷ সার ও মাটি যেন ঠিকমতো মিশে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে৷ তারপর
গর্তের মুখ ঢেকে দিতে হবে এবং ৭ দিন পর এসে গর্ত খুঁড়ে আবার মাটির সাথে সার
ঠিকমত মিশেছে কিনা তা পরীক্ষা করে আবার গর্তের মুখ বন্ধ করে দিতে হবে৷
তরমুজ চাষের জন্য চারা তৈরিঃ
সাধারণত কৃষকরা শীতকালে তরমুজ বীজের অঙ্কুরোদগম সমস্যায় পড়েন৷ এজন্য
তাপমাত্রা কমপক্ষে ২৫-৩০ ডিগ্রি সেঃ প্রয়োজন৷ ১৫ ডিগ্রি সেঃ এর নিচের
তাপমাত্রায় তরমুজের বীজ গজায় না৷ চারা তৈরি জন্য সন্ধ্যাবেলায় ৪-৬ ঘণ্টা
বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর ভিজা বীজ পানি থেকে উঠিয়ে ছত্রাকনাশক যেমনঃ
কার্বেন্ডাজিম বা ট্রাইকোডার্মা পাউডার ৩ গ্রাম /১ লিঃ পানির দ্রবনে ৩০ মিঃ
চুবিয়ে রাখবেন৷ এটা ৪/৫ টি রসুনের কোয়া বা জাম পাতার রস মিশ্রিত পনিতে মিশিয়ে ও
বীজ শোধন করা যায়। তারপর পানি ঝরিয়ে বীজ শুকিয়ে সুতি কাপড়ের মধ্যে রেখে ভাঁজ
করে চটের বস্তায় তা আবার ভাঁজ করে মুড়িয়ে রাখতে হবে। বীজসহ চটের বস্তা ৩০-৪৫
ঘণ্টা হালকা রোদে জাগ দিয়ে রাখতে হবে। চটের বস্তায় পানি ছিটিয়ে মাঝে মাঝে তা
ভিজিয়ে দিতে হবে। অথবা গোবরের মাদার ভিতর কিংবা মাটির পাত্রে রক্ষিত
বালির ভিতর কিংবা চুলার উষ্ণতায় বা বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে পলিথিন ব্যাগে বীজ
ঢুকিয়ে ঝুলিয়ে রাখা এমনকি ভেজা কাপড়ের পুটলিতে বেঁধে খড়ের গাদায় কিংবা কোমরের
লুঙ্গি বাঁধার স্হানে রেখে দিলেও শরীরের উত্তাপে ২/৩ দিনের মধ্যেই বীজ অঙ্কুরিত
হয়৷ এবং এ সময়ের মধ্যেই চটের বস্তায় রাখা বীজ গজিয়ে যায়। পলিব্যাগ বা
প্লাস্টিকের কাপ অথবা ট্রে তে চারা তৈরি করাই ভালো।
একটি ট্রে-তে ১০০টি চারা তৈরি করা যায়। এই ট্রের সুবিধা হলো, যে কোনো সময় যে
কোনো স্থানে স্থানান্তর করা যায়, বৃষ্টি থেকে সহজে রক্ষা করা যায় ও বারবার
ব্যবহার করা যায়। গজানো বীজ পলিব্যাগে ফেলার জন্য পলিব্যাগে গোবর সার মেশানো
মাটি ভরে রাখতে হবে।
গজানো তরমুজ বীজ চট থেকে বের করে একটা একটা করে এক একটি পলিব্যাগের
মাটিতে অল্প গভীরে বপন করতে হবে। বপনের আগে প্রতিটি পলিব্যাগের মাঝখানে একটা
কাঠি দিয়ে সামান্য গর্ত করে রাখতে হবে। পলিব্যাগে বীজ বপনের আগে গজানো বীজের
সাথে সামান্য শুকনো ঝুরঝুরে মাটি মিশিয়ে নিলে বীজ বপনে সুবিধা হবে। অংকুর বের
হওয়া মুখ নিচের দিকে দিয়ে মাটিতে বীজ বপন করতে হবে। তারপর তা মাটি দিয়ে ঢেকে
দিতে হবে। পলিব্যাগে বীজ বপন শেষ হলে ওপর থেকে হালকা করে ঝাঝরি দিয়ে পানি
ছিটাতে হবে। ভারী বৃষ্টি যাতে চারার ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য বীজতলা বা বেডের
ওপরে বাঁশের চটা দিয়ে নৌকার ছৈয়ের মতো করে পলিথিনের ছাউনির ব্যবস্থা করতে হবে।
বৃষ্টি বা কড়া রোদ থেকে এই ছাউনি চারাকে রক্ষা করবে।
তরমুজ চাষে বীজ বপনের সময়/উৎপাদন মৌসুম
বাংলাদেশে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত আবহাওয়া
তরমুজ চাষের উপযোগী। বীজ বোনার জন্য জানুয়ারির ৩য় সপ্তাহ থেকে শীত একটু
কমলে ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম পক্ষ সর্বোত্তম। আগাম তরমুজের ফসল পেতে
হলে জানুয়ারি মাসে বীজ বুনে শীতের হাত থেকে কচি চারা রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
এর জন্য পলি টানেল ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও আগাম কিছু তরমুজের জাত আছে
যেগুলো নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত বপন করা যেতে পারে।
তরমুজের চাষের জন্য বীজ বপন:
প্রতি মাদায় ৪-৫টি তরমুজ বীজ বপন করা যাবে। তবে বীজ বপনের ৮-১০ দিন আগে
মাদা তৈরি করে মাটিতে সার মেশাতে হয়। ২ মিটার দূরে দূরে সারি করে প্রতি সারিতে
২ মিটার অন্তর মাদা করতে হবে। প্রতিটি মাদা সাধারণত ৫০ সেমি. প্রশস্ত ও ৩০
সেমি.গভীর হতে হবে। চারা গজানোর পর প্রতি মাদায় ২টি করে চারা রেখে বাকিগুলো
তুলে ফেলতে হবে।
তরমুজ চাষের জন্য চারা রোপণ
বীজ বপণের চেয়ে তরমুজ চাষের জন্য চারা রোপণ করাই উত্তম। ২৫-৩০
দিন বয়সের ৪-৫ পাতাবিশিষ্ট একটি চারা মাদায় রোপণ করা হয়। চারা জমিতে রোপনের পর
গোড়ায় পানি দিতে হবে যাতে শিকড় দ্রুত মাটি ধরতে পারে৷
তরমুজ চাষের জন্য মাচা তৈরি
তরমুজের দুই বেডের মাঝে আড়াই হাতের ৪ টি খুটি সমান্তরালে কয়েক হাত পর পর
পুতে দিতে হবে। খুটির সাথে বাশের বাতা, কাবারি বা চটা কট শুতা বেধে উপরে নেট
তুলে ছাউনি করে, মাচা তৈরি করতে হবে।
তরমুজের চাষের জন্য বীজের পরিমাণঃ
জাতভেদে প্রতি শতকে ১.৫-২ গ্রাম তরমুজ বীজের প্রয়োজন হয়। আবার প্রতি
একরে ৩৫০-৫০০ গ্রাম তরমুজ বীজের প্রয়োজন হয়। চারা তৈরি করলে ৩০০-৪০০
গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়৷
তরমুজ চাষে সার প্রয়োগ (Fertilizer application)
তরমুজের জমিতে নিম্নোক্ত হারে সার (শতাংশ প্রতি) প্রয়োগ করা যেতে পারে-
| সারের নাম | সারের পরিমাণ (শতাংশ প্রতি) | ||||
|---|---|---|---|---|---|
| তরমুজের বেড তৈরির সময় | ১ম কিস্তি (চারা রোপণের ১০-১৫ দিন পর) | ২য় কিস্তি (প্রথম ফুল ফোটার সময়) | ৩য় কিস্তি (ফল ধারণের সময়) | ৪র্থ কিস্তি (ফল ধারণের ১৫-২০ দিন পর) | |
| গোবর/কম্পোস্ট | ৮০-৯০ কেজি | - | - | - | - |
| ইউরিয়া | - | ৪০০-৪২০ গ্রাম | ২৪০-২৫০ গ্রাম | ২৪০-২৫০ গ্রাম | ২৪০-২৫০ গ্রাম |
| টিএসপি | ৪০০-৪৫০ গ্রাম | - | - | - | - |
| ডিএপি | - | - | - | - | - |
| এমপি | ৪০০-৪৫০ গ্রাম | ৩২০-৩৩০ গ্রাম | ৩২০-৩৩০ গ্রাম | ৩২০-৩৩০ গ্রাম | ৩২০-৩৩০ গ্রাম |
| জিপসাম | ৪০০-৪৫০ গ্রাম | - | - | - | - |
| দস্তা | ৩০-৪০ গ্রাম | - | - | - | - |
| বোরন (প্রয়োজনবোধে) | ৪৫-৫০ গ্রাম | - | - | - | - |
তরমুজ চাষে সেচ দেওয়া
শুকনো মৌসুমে তরমুজের জমিতে সেচ দেয়া খুব প্রয়োজন। গাছের গোড়ায় যাতে পানি জমে
না থাকে সেদিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে।
তরমুজ চাষে শাখা প্রশাখা ছাটাই
তরমুজ গাছে যখন ৮/১০ পাতা হবে তখনই প্রধান শাখার মাথা কেটে দিতে হবে, তারপর যে
প্রশাখা বের হবে তার ৪/৫ টি রেখে বাকীগুলো কেটে দিতে হবে। অতপড় প্রথম বার চারা
মাচায় তুলে দেয়ার সময় ২ টি শাখা রেখে বাকি গুলা ছেটে দিতে হবে। ২য় বার মাচায়
চারা তুলার ৫/৭ দিন পর লতা ছেটে দিতে হবে। ২য় বার ছাটায় এর ৮/৯ দিন পর আবার
ছেটে দিতে হবে।
প্রতিটি গাছে ৩-৪টির বেশি তরমুজ ফল না রাখাই ভালো। গাছের শাখার মাঝামাঝি গিটে
যে ফল হয় সেটি রাখতে হয়। চারটি শাখায় চারটি ফলই যথেষ্ট। এখানে বলা ভালো
যে,তরমুজ গাছের ৩০টি পাতার জন্য মাত্র একটি ফল রাখাই সবচেয়ে ভালো।
তরমুজ চাষে পরাগায়ন
সকালবেলা তরমুজের স্ত্রী ও পুরুষ ফুল ফোটার সাথে সাথেই স্ত্রী ফুলকে পুরুষ ফুল দিয়ে
কৃত্রিমভাবে হাত সাহায্যে পরাগায়িত করে দিলে ফলন ভালো হয়।
তরমুজ চাষে পোকামাকড় ও রোগবালাই
তরমুজ চাষে পোকামাকড় ও রোগবালাই এবং ভাইরাসের আক্রমণ হয়ে থাকে। নিছে নাম দেওয়া
হলোঃ
তরমুজের পোকামাকড়
পাতার বিটল পোকা,পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা,মাছি পোকা বা ফল ছিদ্রকারী পোকা,লাল
মাকড়/হলুদ মাকড়,লেদা পোকা,থ্রিপস,জাব পোকা।
তরমুজের রোগবালাই
গামোসিস রোগ/ গামি স্টেম ব্লাইট,ফিউজেরিয়াম/ ব্যাকটেরিয়াল উইল্ট রোগ,ডাউনি
মিলডিউ,গোড়া পচা রোগ।
সাবধানতা
একই জমিতে বারবার তরমুজ চাষ করা যাবে না। দিনের বেশিরভাগ সময় ছায়া পড়ে এমন জমিতে তরমুজ চাষ করবেন না। কীটনাশক স্প্রে করার ১৫ দিনের মধ্যে সেই ফল খাওয়া বা বিক্রি করা যাবে না। রোগ প্রতিরোধী জাত বাছাই করে চাষ করা উচিত।
তরমুজ ফসল সংগ্রহ
জাত ও আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে তরমুজ পাকে। সাধারণত ফল পাকতে বীজ বোনার পর থেকে
৮০-১১০ দিন সময় লাগে।
নিচের লক্ষণগুলো দেখে তরমুজ পাকা কি না তা অনেকটাই অনুমান করা যায়।
• ফলের বোঁটার সঙ্গে যে আকর্শি থাকে তা শুকিয়ে বাদামি রং হয় যায়।
• খোসার উপরে সূক্ষ লোমগুলো মরে গিয়ে তরমুজের খোসা চকচকে হয় থাকে।
• তরমুজের যে অংশটি মাটির ওপর লেগে থাকে তা সবুজ থেকে উজ্জল হলুদ রংঙের
হয়।
• তরমুজের শাঁস লাল টকটকে হয়ে থাকে।
• আঙ্গুল দিয়ে টোকা দিলে যদি ড্যাব ড্যাব শব্দ হয় তাহলে বুঝতে হবে যে ফল
পরিপক্কতা লাভ করেছে। কিন্তু অপরিপক্ব ফলের বেলায় শব্দ হবে অনেকটা ধাতবীয়।
• সাধারণত স্ত্রী ফুল ফোটার ৩০-৪০ দিনের মধ্যে তরমুজ পরিপক্ক হয়৷
তরমুজের ফলন
যত্নসহকারে চাষ করলে ভালো জাতের তরমুজ থেকে প্রতি হেক্টরে ৫০-৬০ টন ফলন পাওয়া
যায়।
তরমুজের বীজ সংগ্রহ
ভালো বীজ সংগ্রহের জন্য ফসলের ক্ষেত থেকেই কয়েকটি তরমুজ ফল চিহ্নিত করে রাখতে
হবে। এরপর বীজের জন্য পরিপক্ব তরমুজ ক্ষেত থেকে তুলে ছায়াযুক্ত স্থানে কয়েক দিন
রাখতে হবে। এ তরমুজগুলো লম্বালম্বিভাবে কেটে হাত দিয়ে বীজ তুলে পানিতে ধুয়ে
নিতে হবে। পানিতে ধোয়ার সময় যেসব বীজ পানিতে ভেসে উঠবে, সেগুলো ফেলে দিতে হবে।
ধোয়া হয়ে গেলে একদিন ঠাণ্ডাযুক্ত স্থানে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর কড়া রোদে কয়েক
দিন শুকিয়ে পলিব্যাগে ভরে ঠাণ্ডা স্থানে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
যোগাযোগঃ
কৃষি বিষয়ক যে কোন সমস্যার সমাধান ও ফসলের রােগবালাই এবং পােকামাকড় দমনে জন্য সঠিক পরামর্শ দিতে আপনার পাশে রয়েছে ekrishi24.অথবা নিকটস্থ “কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র (ফিয়াক)” অথবা “উপ সহকারী কৃষি অফিসার” এর সাথে যোগাযোগ করুন।
