বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার পরিচিতি | বেগুনের পোকা ও বালাই

 বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার পরিচিতি


 পোকার পরিচিতি

বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার এটি বেগুনের সর্বাধিক ক্ষতিকর পোকা। এ পোকার বৈজ্ঞানিক নাম Leucinodes orbonalis, ইংরেজীতে এই পোকা Brinjal shoot and fru

বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার এটি বেগুনের সর্বাধিক ক্ষতিকর পোকা। এ পোকার বৈজ্ঞানিক নাম Leucinodes orbonalis, ইংরেজীতে এই পোকা Brinjal shoot and fruit borer নামে পরিচিত। এ পোকার আক্রমনে ক্ষেত্রবিশেষে ৮৫ ভাগ পর্যন্ত ফলনের ক্ষতি হয় ।


বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার এটি বেগুনের সর্বাধিক ক্ষতিকর পোকা। এ পোকার বৈজ্ঞানিক নাম Leucinodes orbonalis, ইংরেজীতে এই পোকা Brinjal shoot and fru
বেগুনের ডগা ছিদ্রকারী পোকা


♥ক্ষতির লক্ষণ:

সাধারনত চারা রোপনের ৪-৫ সপ্তাহ পর এ পোকার আক্রমন দেখা দেয়।  তবে বেগুন গাছে ফুল আসা শুরু হওয়ার পর আক্রমণের মাত্রা বাড়তে থাকে ।এ পোকার কীড়া বা লার্ভা ফল ধরার আগে কচি ডগা ও পাতার বোঁটায় ছিদ্র করে ভিতরে ঢোকে এবং সেখান থেকে খেয়ে খেয়ে বড় হতে থাকে। এতে আক্রান্ত ডগা ও পাতা ধীরে ধীরে ঢলে পড়ে। কিছুদিনের মধ্যে আক্রান্ত ডগাগুলো শুকিয়ে আসে এবং পাশ থেকে নতুন শাখা প্রশাখা বের হয়। গাছে ফুল ফল আসার পর ডগার তুলনায় ফুল ফলে এই পোকার আক্রমন বেশী দেখা যায়। আক্রান্ত ফলের গায়ে ছিদ্র হয় এবং ঐ ছিদ্র পথে কীড়ার মল ও কীড়া বের হতে দেখা যায়। বেশী মাত্রায় আক্রান্ত হলে ফল পঁচতে থাকে এবং ঝরে পড়ে। গ্রীষ্মকালে এ পোকা বেশী সক্রিয় থাকে। সাধারনত শীতের শেষে যখন তাপমাত্রা ও আদ্রতা বাড়তে থাকে তখন এ পোকার আক্রমন বেশী দেখা যায়।তবে পূর্ণতা প্রাপ্ত হওয়ার পর কীড়া পুত্তলিতে পরিণত হওয়ার জন্য ফল থেকে সুড়ঙ্গ তৈরী করে মাটিতে নেমে আসে । কীড়া বের হওয়ার ছিদ্র ফলে স্পষ্ট দেখা যায় তবে ডগায় এই ছিদ্র পরিলক্ষিত নাও দেখা যেতে পারে ।

♥প্রতিকার:

 গ্রীষ্মকালে এ পোকার ব্যাপকা আক্রমণ পরিলক্ষিত হয় । অন্যদিকে শীতকালে এ পোকার আক্রমণের হার কম থাকে । সেহেতু এ পোকা দমনের ব্যবস্থাপনাও ঋতুভেদে ভিন্নতর হওয়া বাঞ্চনীয় ।
গ্রীষ্মকালীন ব্যবস্থাপনা

১. সপ্তাহে অন্ততঃ একবার পোকা আক্রান্ত ডগা ও ফল বাছাই করে বিনষ্ট করতে হবে ।

২. ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহারঃ চারা রোপনের ২/৩ সপ্তাহের মধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাততে হবে । (প্রতি শতাংশে ১টি)

৩. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে জৈব বালাইনাশক, স্পেনোসেড ( ট্রেসার ৪ মিলি./ ১০ লি. পানি হারে ) স্প্রে করতে হবে । গাছের ফুল আসার সময় হতে প্রতি ২ সপ্তাহ অন্তর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে ।

৪. প্রতি ১৫ দিন পর পর উপকারী পোকা, ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিজ ও ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করতে হবে ।

৫. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে ভলিয়াম ফ্লাক্সি ৩০০ এসসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিঃলিঃ হারে বা কারটাপ গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সানটাপ ২.৪ গ্রাম/ লি. হারে বা সাইপামেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিপকর্ড বা ফেনকর্ড বা ম্যাজিক বা কট ০.৫ মিলি./ লি হারে বা ডেল্টামেথ্রিন গ্রুপের কীটমাশক যেমন: ডেসিস বা ক্র্যাকডাউন ১ মিলি./ লি হরে বা এ পোকার জন্য অন্যান্য অনুমোদিত রাসায়নিক কীটনাশক ১০-১২ দিন পর পর ৪-৫ বার স্প্রে করতে হবে ।


♥শীতকালীন ব্যবস্থাপনা


১. সপ্তাহে অন্ততঃ একবার পোকা আক্রান্ত ডগা ও ফল বাছাই করে বিনষ্ট করতে হবে ।

২. ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহারঃ চারা লাগানোর ২/৩ সপ্তাহের সধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাততে হবে ।

৩. প্রতি সপ্তাহে একবার করে উপকারী পোকা, ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিজ ও ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করতে হবে ।

৪. আইপিএম প্রদ্ধতির এলাকাভিত্তিক প্রয়োগ করতে হবে ।

৫. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে জৈব বালাইনাশক, স্পেনোসেড ( ট্রেসার ৪ মিলি./ ১০ লি. পানি হারে ) স্প্রে করতে হবে বা ভলিয়াম ফ্লাক্সি ৩০০ এসসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিঃলিঃ হারে বা কারটাপ গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সানটাপ ২.৪ গ্রাম/ লি. হারে বা সাইপামেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিপকর্ড বা ফেনকর্ড বা ম্যাজিক বা কট ০.৫ মিলি./ লি হারে বা ডেল্টামেথ্রিন গ্রুপের কীটমাশক যেমন: ডেসিস বা ক্র্যাকডাউন ১ মিলি./ লি হরে বা এ পোকার জন্য অন্যান্য অনুমোদিত রাসায়নিক কীটনাশক ১০-১২ দিন পর পর ৪-৫ বার স্প্রে করতে হবে ।


♥আইপিএম প্যাকেজ:


➤১। গাছের আক্রান্ত অংশ ধ্বংস করাঃ


 চারা রোপনের ১৫ দিন পর থেকে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১-২ বার অবশ্যয় সরেজমিনে বেগুন ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে। একই সাথে রোগাক্রান্ত ডগা ও ফল হাত দিয়ে সংগ্রহ করে জমি থেকে দুরে মাটিতে গর্ত করে পূঁতে ফেলতে হবে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এতে গাছের আক্রান্ত অংশসমূহে বিদ্যমান পোকার কীড়া বা লার্ভাসমূহ মারা যায় এবং জমিতে পোকার আক্রমন কমে আসে।

➤২। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারঃ 

বেগুনের এ পোকা দমনের জন্য সেক্স ফেরোমন ফাঁদ এখন বাজারে সহজলভ্য। প্রতি ১০ বর্গমিটার এলাকার জন্য একটি ফাঁদ গাছের উচ্চতার উপর খুটি দিয়ে স্থাপন করতে হবে। চারা লাগানোর ৪-৫ সপ্তাহ পর ফাঁদ স্থাপন করতে হবে এবং ৫০-৬০ দিন পর ফাঁদ পরিবর্তন করে দিতে হবে। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ পুরুষ পোকসমূহকে আকৃষ্ট করে । পরবর্তীতে পুরুষ পোকাগুলো আটকা পড়ে ও মারা যায়। এতে এ পোকার প্রজনন ব্যাপকভাবে হ্রাস পায় এবং পোকার আক্রমন কমে আসে। ইস্পাহানী বায়োটেক সহ বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বাজারজাত করছে। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকেও কৃষকদেরকে এই ফাঁদ সরবারহ করা হয়।

ক. সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বা গন্ধফাঁদের ব্যবহার

সেক্স ফেরোমন হচ্ছে এক ধরনের প্রাকৃতিক রাসায়নিক পদার্থ, যা কোনো প্রজাতির স্ত্রী পোকা কর্তৃক একই প্রজাতির পুরুষ পোকাকে প্রজনন কাজে আকৃষ্ট করার জন্য প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন হয়। সাধারণত ২ থেকে ৪ ধরনের রাসায়নিক উপাদানসমূহের সংমিশ্রণে সেক্স ফেরোমন গঠিত। সেক্স ফেরোমন ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত, যা মানুষ বা পরিবেশের কোনোরূপ ক্ষতি করে না। সুতরাং পরিবেশবান্ধব। অন্যান্য মথ জাতীয় পোকার মতো বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার সেক্স ফেরোমন দুটি যৌগিক পদার্থ যেমন- ই-১১-হেক্সডেসিনাইল এসিটেট এবং ই-১১-হেক্সডিসেন-১ ওএল সমন্বয়ে গঠিত। এ যৌগ দুটির ১০০ঃ১ অনুপাতে মিশ্রণ সর্বাধিক সংখ্যক পুরুষ মথ আকৃষ্ট করতে সক্ষম। ক্ষতিকারক পোকা ব্যবস্থাপনার জন্য সাধারণত ৩টি উপাদানের প্রয়োজন হয় যেমন- সেক্স ফেরোমন টোপ, একটি ফাঁদ এবং ফাঁদটি মাঠে স্থাপনের জন্য ১-২ খুঁটি।

 সাধারণত ৩টি উদ্দেশ্যে এ ফাঁদ ব্যবহার হয় যথা-

০১. পোকার উপস্থিতি মনিটরিং বা পর্যবেক্ষণ করা;
০২. অধিক হারে পোকা আটকানো এবং;
০৩. পোকার প্রজনন কাজে বাধার সৃষ্টি করা।


ফেরোমন ফাঁদ বা পানি ফাঁদ বা জাদুর ফাঁদ তৈরির পদ্ধতি

প্রথমত. প্রায় ৩ লিটার পানি ধারণক্ষমতাযুক্ত ২২ সেন্টিমিটার লম্বা গোলাকার বা চার কোণ বিশিষ্ট প্লাস্টিকের পাত্র বা বৈয়ামের উভয় পাশে পাত্রের নিচ বা তলা হতে ৪-৫ সেন্টিমিটার উঁচুতে ত্রিভূজাকারে কেটে ফেলতে হবে। ত্রিভূজের নিচের বাহু সাধারণত ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতা ১১-১২ সেন্টিমিটার হওয়া ভালো। দ্বিতীয়ত. সাবান মিশ্রিত পানি সব সময় পাত্রের তলা থেকে ওপরের দিকে কমপক্ষে ৩-৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত রাখা দরকার। পাত্রের ঢাকনার মাঝে কালো রঙের একটি ল্যুপ বসানো থাকে। ল্যুপের নিচের ছিদ্রে সরু তার বাধা হয়। তারের অপর মাথায় ফেরোমন সংবলিত টিউব বা লিউর এমনভাবে বাধতে হবে যেন লিউরটি সাবান মিশ্রিত পানি থেকে ২-৩ সেন্টিমিটার ওপরে থাকে। সতর্ক থাকতে হবে যেন পাত্রের তলায় রাখা সাবান পানি শুকিয়ে না যায় এবং লিউরটি কোনোভাবেই সাবান পানিতে ভিজে না যায়। যাতে এর সাথে ব্যবহার করলে একটি পাত্র ২-৩ মৌসুম পর্যন্ত চলতে পারে। কাটা ফাঁকা অংশ উত্তরে-দক্ষিণে স্থাপন করতে হবে যেন বাতাস চলাচলে সুবিধা হয়। গাছ থেকে ফাঁদ ৬ ইঞ্চি ওপরে লাগাতে হবে। গাছ বাড়ার সাথে সাথে এ ৬ ইঞ্চি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সাবান পানি ২-৩ দিন পরপর বদলাতে হবে। প্রতি ৩ মাস পরপর লিউর বদলাতে হবে। আর এ কাজটি চারা লাগানোর দেড় মাসের মধ্যে জমিতে স্থাপন করতে হবে। অনেকে অবশ্য পোকা আক্রমণ করার পর জমিতে স্থাপন করেন, যা ঠিক না।


♥জমিতে ফাঁদ স্থাপনের সময় ও কৌশল

বেগুন ফসলের জমিতে সাধারণত চারা রোপণের ৪-৫ সপ্তাহ পর  থেকেই বেগুনের কচি ডগায় ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ শুরু হয়। তাই ফসলের এ পর্যায় হতেই ফাঁদ স্থাপন করা আবশ্যক। সাধারণত অন্য বেগুনের জমি বা আশপাশের পুরনো শুকনা বেগুন গাছের স্তূপ থেকে পোকার মথ জমিতে আসে এবং পরে ডগা ও ফলে বংশবৃদ্ধি করে। সে কারণে পোকা সফলভাবে দমন করার জন্য শেষবার ফসল সংগ্রহ করা পর্যন্ত ফেরোমন ফাঁদ জমিতে রাখতে হবে। প্রতি ৩ শতকের জন্য একটি ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন করতে হবে।


♥ফাঁদ ও টোপ পরিবর্তনের সময়

পানি ফাঁদ সহজে নষ্ট হয় না। সাবধানতা ও যত্নের সাথে ব্যবহার করলে এ ধরনের একটি ফাঁদ ২-৩ মৌসুম পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। অতিরিক্ত বৃষ্টি, রোদ বা বাতাসে ফাঁদ নষ্ট হতে পারে। সেক্ষেত্রে দেরি না করে জমিতে নতুন ফাঁদ স্থাপন করতে হবে। বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার জন্য ব্যবহৃত অধিকাংশ ফেরোমন টিউব/টোপ/ লিউর এ সাধারণত ৩ মিলিগ্রাম পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এসব টোপ দেড় থেকে ২-৩ মাস কার্যক্ষম থাকে, সেজন্য ২ থেকে ৩ মাস পর টোপ পরিবর্তন করা দরকার। একটি বেগুন মৌসুমে প্রায় ২টি টোপ প্রয়োজন হয়।


♥ফাঁদ জমিতে স্থাপনের পর করণীয়

➡️প্রতিদিন ফাঁদ পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

➡️প্রতিদিন ফাঁদের পানি পরীক্ষা করে মরে থাকা পোকা ফাঁদের পানি থেকে আঙুল/কাঠি দিয়ে সরিয়ে ফেলতে হবে।

➡️২-৩ দিন পর পর সাবানের পানি পাল্টে দিতে হবে।

➡️সাবান পানির স্তর সব সময় ৩-৪ সেন্টিমিটার যাতে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

➡️ফাটা বা ছিদ্রযুক্ত ফাঁদ পাল্টিয়ে নুতন ফাঁদ প্রতিস্থাপন করতে হবে।

➡️গাছের বাড়বাড়তির সাথে তাল রেখে ফাঁদটিকেও ক্রমান্বয়ে ওপরের দিকে তুলতে হবে।

➡️নির্দিষ্ট সময়ান্তে লিউর বা টোপ পরিবর্তন করতে হবে;
লিউর স্থাপনের সময় লিউরটির মুখ কোনোভাবেই খোলা যাবে না।


➤৩। উপকারী পোকার ব্যবহারঃ

 ট্রাইকোগ্রামা (Tricogramma chilonis) ও ব্রাকন (Bracon habetor) নামক দুটি উপকারী পোকা ব্যবহার করে বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমন ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা যায়। ট্রাইকোগ্রামা পোকার ডিমগুলো খেয়ে ফেলে আর ব্রাকন পোকার লার্ভাগুলো খায়। সম্প্রতি কিছু এনজিও এবং বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কৃষকদের এ পোকাগুলো সরবারহ করছে। কৃত্তিমভাবে জমিতে এদুটি উপকারী পোকা ছড়িয়ে দিলে বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমন অনেকাংশে কমে আসে। এক্ষেত্রে ক্ষেতে হেক্টর প্রতি ১ গ্রাম ট্রাইকোগ্রামা এবং ৮০০-১২০০ টি ব্রাকন উপকারী পোকা পর্যায়ক্রমে ছাড়তে হবে।

☞খ. বায়ো এজেন্টসমূহের জীবন স্তর ও অবমুক্তায়ন পদ্ধতি


✔০১.  ট্রাইকোগ্রামা বোলতা

ট্রাইকোগ্রামা বোলতা ট্রাইকোগ্রামটিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ক্ষুদ্র ঝালরওয়ালা পাখাবিশিষ্ট ছোট এ বোলতা লেপিডপটেরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত (প্রজাপতি ও মথ) শত্রু পোকার ডিম পরজীবায়ন করে। এ পোকার কোনো কোনো প্রজাতি ওয়াটার বিটল, ওয়াটার বাগ এবং অন্যান্য পোকার ডিমের পরজীবী। এ প্রজাতির পোকা প্রয়োজনে এদের পাখা দিয়ে সাঁতার কেটে হোস্ট পোকার ডিম খুঁজে বের করতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির এ পোকা বিভিন্ন হোস্ট প্রজাতির ওপর বংশ বৃদ্ধি করে এবং হরমোন ও অন্যান্য পদার্থের ওপর নির্ভর করে এদের শরীরের রঙ পরিবর্তন ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি বা পরিবর্তন হতে দেখা যায়। হোস্ট পোকার ডিমে এরা ডিম পাড়ে এবং ডিমের মধ্যে বাড়তে থাকে, ফলে শত্রু পোকার ডিম থেকে আর কীড়া জন্মাতে পারে না। হোস্ট পোকার ডিমে ৭ থেকে ১০ দিন থাকার পর বোলতারা বের হয়ে আসে। এরা খুবই ছোট পোকা, সচরাচর থেকে ১ মিলিমিটার লম্বা হয়। বর্তমানে ভায়ালে এ পরজীবী পোকা পাওয়া যায়। ১ গ্রাম হোস্ট পোকার ডিমের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার পরজীবী ট্রাইকোগ্রামা থাকে, যা ১ হেক্টর জমিতে ব্যবহার করা যায়। বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার ডিমে কোনো আবরণ থাকে না, ফলে ট্রাইকোগ্রামা বোলতা সহজেই পরজীবায়ন ঘটাতে পারে। আক্রমণের শুরু থেকে শেষ ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর এ বোলতা অবমুক্ত করতে হবে।

♦ট্রাইকোগ্রামা অবমুক্তকরণের পদ্ধতি

ট্রাইকোগ্রামা অবমুক্তকরণের জন্য যেসব বিষয়ের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে
নিয়মিত জরিপের মাধ্যমে বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আবির্ভাব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে;
পাতায়/ডগায়/ফুল/কুড়ি/ফলের বৃতিতে ডিম দেখামাত্র পরজীবী ট্রাইকোগ্রামা অবমুক্ত শুরু করতে হবে;
বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণের পুরো মৌসুম ধরে নিয়ম অনুযায়ী পরজীবী বোলতাটি অবমুক্তকরণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে;
সাধারণত সকাল ৮টা থেকে ১০টা বা পড়ন্ত বিকাল ৪.৩০টা থেকে ৬টা পর্যন্ত পরজীবী বোলতা অবমুক্ত করা উত্তম। পরজীবায়নকৃত ডিম অথবা সদ্যজাত ট্রাইকোগ্রামা বোলতা ভায়াল এ করে মাঠে পরিবহন করা হয়;
পুরাতন খবরের কাগজ অথবা অন্য কাগজ সাধারণত ৬-৭ সেন্টিমিটার বর্গাকারে কাটা হয়। এরপর তা মাঝখানে ১টি ভাঁজ দিয়ে বৈয়মে রাখা হয় ঠিক যেভাবে চকোলেটের কাগজ যেভাবে ভাঁজ দেয়া থাকে সেভাবে। ২২ সেন্টিমিটার লম্বা একটি বৈয়মে সাধারণত ১২০ থেকে ১৩০ টি কাগজের টুকরা ধরে;
২২ সেন্টিমিটার উচ্চতা বিশিষ্ট বা ৩ লিটার পানি ধরে এমন বৈয়মে ১২০ থেকে ১৩০টি ভাঁজ করা কাগজের টুকরা রাখার পর সেখানে ১ গ্রাম ট্রাইকোগ্রামা ছাড়া হয়। কাগজের ভাঁজে পূর্ণবয়স্ক ট্রাইকোগ্রামা ঢুকে গেলে তা বেগুনের ২ ডালের মাঝে অথবা অন্য ভাঁজে স্থাপন করতে হয়;
শুরুতে আইলের থেকে ২ লাইন বাদ দিয়ে মাঠের এক কোণ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। অতঃপর ৫-৬ ধাপ যাওয়ার পর একটি ভাজ করা কাগজের টুকরা বেগুন গাছের ডালের ভাজে স্থাপন করতে হবে। লাইন শেষ হওয়ার আগেই বাঁক নিয়ে ২ লাইন বাদ দিয়ে আবার লাইন বরাবর হাঁটতে হবে;
এভাবে ক্রমে একই নিয়মে পুরো জমিতে ট্রাইকোগ্রামা অবমুক্ত করতে হবে। স্ট্রিপ বা কার্ডে ট্রাইকোগ্রামা রাখা থাকলে সেক্ষেত্রে অবমুক্ত শেষ হলে প্রতিটি স্ট্রিপকার্ড বেগুন গাছের পাতা বা ডালের খাঁজে গেঁথে বা জাংলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে যা থেকে পরে আরও ট্রাইকোগ্রামা বের হয়ে পরজীবায়ন ঘটাতে পারে।

✔০২. ব্রাকন

ব্রাকন জাতীয় পরজীবী পোকা ব্রাকোনিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। মাঝারি আকারের এ বোলতা অনেক পোকার কীড়া পরজীবায়ন করতে পারে। এদের স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েই পাখাওয়ালা বা পাখাবিহীন হতে পারে। এদের এ্যাবডোমেন লোমবিহীন বা অল্প লোমবিশিষ্ট হয়। ক্ষতিকর পোকার একটি কীড়া ক্যাটারপিলারের মধ্যে অনেক সংখ্যক এ পোকার কীড়া থাকতে পারে। এ কীড়ার শরীরের সাদা, হলুদ রঙের রেশমি কোকনের মধ্যে পুত্তলি জন্মায়। কোনো কোনো প্রজাতির শত্রু পোকার কীড়ার মধ্যে ও পুত্তলি অবস্থায় থাকে ব্রাকনের কীড়া খুবই আক্রমণ প্রবণ একটি বহিঃপরজীবী। স্ত্রী ব্রাকন প্রথমে ভেনম বা বিষ হোস্ট পোকার কীড়ার শরীরে ঢুকিয়ে দেয়, ফলে কীড়া অবস হয়ে যায়। একটি স্ত্রী বাকন ৫০০ থেকে ১ হাজার হোস্ট পোকার কীড়া পরজীবায়ন করতে পারে। পরজীবায়নকৃত কীড়া দুর্বল হয়ে যায় এবং আর বাঁচতে পারে না। পরজীবায়নকৃত কীড়ার ওপরে স্ত্রী ব্রাকন ডিম দেয় এবং পরে কীড়ার শরীরের ভেতরে খেয়ে বাড়তে থাকে। ফলশ্রুতিতে শত্রুপোকা ধ্বংস হয়।
এ প্রজাতির পূর্ণ বয়স্ক পোকা কাচের/প্লাস্টিকের পাত্রে/বৈয়মে রাখা এবং এর মাধ্যমে মাঠে সরবরাহ করা হয়। এ বৈয়মকে বাংকার বলে। একটি বাংকারে ৮০০ থেকে ১ হাজার জীবন্ত পূর্ণ বয়স্ক ব্রাকন রাখা যায়। বাংকারে অথবা মাঠে ৬০:৪০ অনুপাতে স্ত্রী ও পুরুষ পোকা অবমুক্তকরণ করা আবশ্যক। একটি শস্য মৌসুমে ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর ৫-৬ বার পূর্ণ বয়স্ক ব্রাকন অবমুক্ত করতে হবে।


☞মাঠে ব্রাকন অবমুক্তকরণ পদ্ধতি

বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার কীড়ার আক্রমণের শুরু থেকে শেষ ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর পূর্ণ বয়স্ক এ পোকা অবমুক্ত করতে হবে। পূর্ণবয়স্ক ব্রাকন অবমুক্তকরণের সময় যেসব বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
ক. নিয়মিত জরিপের মাধ্যমে বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী কিংবা জাতীয় ফসলের মাছি পোকার আবির্ভাব নিশ্চিত হতে হবে;

☞খ. ডগায় বা ফলে হোস্ট পোকার কীড়া দেখামাত্র পরজীবী ব্রাকন অবমুক্ত করতে হবে এবং আক্রমণের পুরো মৌসুম ধরে নিয়ম অনুযায়ী পরজীবী ব্রাকন অবমুক্তকরণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে;

☞গ. সাধারণত সকাল ৮টা থেকে ১০টা অথবা পড়ন্ত বিকালে ৪.৩০টা থেকে ৬টা পর্যন্ত পরজীবী এ বোলতা অবমুক্ত করা উত্তম। পরজীবায়নকৃত ডিম অথবা সদ্যজাত ব্রাকন বৈয়ম বা ব্যাংকারে করে মাঠে পরিবহন করা হয়;

☞ঘ. সাধারণত ২২ সেন্টিমিটার একটি বৈয়ম বা বাংকারে ৮০০ থেকে ১ হাজার পূর্ণ বয়স্ক ব্রাকন থাকে। এ পোকা অবমুক্তকরণের শুরুতেই আইলের পাশ থেকে ২ লাইন বাদ দিয়ে মাঠের এক কোনো দিয়ে ভেতরে গিয়ে ৫-৬ ধাপ যাওয়ার পর বাংকারের মুখের ঢাকনা একটু খুলে কয়েকটি ব্রাকন বের করে দিতে হবে। এভাবে এক লাইনে ছাড়া শেষ হলে ২ লাইন বা ৬-৭ ধাপ বাদ দিয়ে পরের লাইনে আবার সোজা হাঁটতে হবে এবং ৫-৬ ধাপ পর পর পোকা ছাড়তে হবে;

☞ঙ. এভাবে একই নিয়মে পুরো জমিতে ব্রাকন অবমুক্ত শেষ হলে বাংকার আওতামুক্ত করে রেখে দিতে হবে। পরের দিন বয়স্ক ব্রাকন ডিম থেকে বের হলে তা আবার অবমুক্ত করতে হবে এবং ব্রাকন বের শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে;

☞চ. সবশেষে স্ট্রিপ/কার্ড বেগুন গাছের ডালে বা জাংলায় বেঁধে রাখতে হবে যাতে পরে আরও ব্রাকন বের হয়ে পরজীবায়ন ঘটাতে পারে।


➤ট্রাইকোগ্রামা ও ব্রাকনকে কৃত্রিমভাবে খাওয়ানোর পদ্ধতি


প্রখর রোদ বা অতিবৃষ্টির কারণে ট্রাইকোগ্রামা ও ব্রাকন মাঠে অবমুক্তকরণ সম্ভব না হলে এদের জন্য মধু বা চিনির শরবত সরবরাহ করতে হবে। ছোট পরিষ্কার এক টুকরো তুলাতে মধু বা মিষ্টির সিরা বা শরবত ভিজিয়ে ভায়ালের বা বাংকারের মুখের কাপড়ের ওপর রাখতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে যেন মধু বা শরবত কাপড় চুইয়ে বা ফোঁটা আকারে ভায়ালের বা বাংকারের ভেতরে প্রবেশ না করে এবং কোনোভাবেই পিঁপড়ার আক্রমণ না ঘটে। তুলার টুকরা শুকিয়ে গেলে সেটি আবার মধু বা শরবত দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। প্রখর রোদ বা বৃষ্টির সময় ট্রাইকোগ্রামা ও ব্রাকন বোলতা অবমুক্ত করা উচিত হবে না। কোনো কারণে অবমুক্ত করতে না পারলে এদের এমনভাবে রাখতে হবে যেন পিঁপড়া ধরতে না পারে। এজন্য টেবিলের অথবা চৌকির পায়ার নিচে পানির পাত্র দিয়ে তার ওপর রাখা যেতে পারে। আলো বাতাস চলাচল করতে পারে এমন স্থানে ভায়াল সংরক্ষণ করতে হবে।

☞৪। কীটনাশক ব্যবহারঃ 

আইপিএম প্যাকেজে সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে কীটনাশক স্প্রে করা হয়। দীর্ঘদিন যাবত একই কীটনাশক ক্রমাগত ব্যবহারের কারনে এ পোকা কীটনাশক প্রতিরোধী হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে অনেক কীটনাশকই কাজ করছে না। এক্ষেত্রে ভলিউম ফ্লেক্সি ৩০০ (Thiamethoxam + Chlorantraniliprole) প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলি করে মিশিয়ে ৭ দিন অন্তর অন্তর স্প্রে করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে। অথবা প্রোক্লেইম ৫ (Emamectin Benzoate) প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম করে মিশিয়ে ৭ দিন অন্তর অন্তর স্প্রে করতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, এক সপ্তাহে ভলিউম ফ্লেক্সি ব্যবহার করলে পরবর্তী সপ্তাহে প্রোক্লেইম ব্যবহার করতে হবে। এভাবে পরিবর্তন করে কীটনাশক ব্যবহার করলে কৃষক ভাইরা ভাল সুফল পাবেন। এছাড়াও ট্রেসার ৪৫ (Spinosad) প্রতি লিটার পানিতে ৪ মিলি করে অথবা মার্শাল ২০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলি করে মিশিয়ে স্প্রে করা যায়। খেয়াল রাখতে হবে প্রতি সপ্তাহে একবার জমি থেকে বেগুন সংগ্রহ করার পর কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। একমাস বয়স থেকে নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করলে এ পোকার আক্রমন সফলভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
স্বাস্থ্যসম্মত এবং পরিবেশবান্ধব সবজি উৎপাদনের জন্য আইপিএম প্যাকেজ একটি লাগসই প্রযুক্তি। দিন দিন দেশে এবং দেশের বাহিরে বাংলাদেশের সবজির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে বাড়ছে নানারকম ক্ষতিকর পোকামাকড়ের আক্রমন। আইপিএম পদ্ধতি ব্যবহার করে ক্ষতিকর পোকামাকড় দমন করা যায় এবং গুনগত মানসপন্ন সবজি উৎপাদন নিশ্চিত করা যায়।


জৈব বালাইনাশক প্রয়োগ

সবজির জাবপোকা, পাতাকাটা, পাতাভোজী, পাতা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য বাইকাও জাতীয় জৈব বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হবে। এগুলো পরিবেশবান্ধব বালাইনাশক। নিম, থুজা, নয়নতারাসহ বিভিন্ন লতাপাতার নির্যাস থেকে  বাইকাওয়ের মূল উপাদান নেয়া হয়। এতে রয়েছে ০.৩৬% মেট্রিন একুয়া দ্রবণ ও প্রাকৃতিক অনুখাদ্য, যার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। ব্যবহারের ২৪ ঘণ্টা পরেই ফসল খাওয়া যায়। পোকার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রথমে বিকল করে দেয়। স্পর্শ বালাইনাশক হিসেবে কাজ করলেও পরে পোকার স্নায়ুতন্ত্রকে অকেজো করে দেয়, ফলে পোকা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়। প্রতি ১ মিলিলিটার বাইকাও ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে  করতে হবে অথবা প্রতি হেক্টর জমিতে ১ লিটার বাইকাও ১ হাজার লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে পাতায় এবং কান্ডে স্প্রে করতে হবে। অথবা প্রতি শতাংশ জমিতে ৪ মিলিলিটার ৪ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।


কৃষকভাইদের করণীয়:

আমাদের দেশের কৃষকভাইরা এ পোকা দমনের জন্য অতিমাত্রায় রাসায়নিক কীটনাশকের উপর নির্ভর করে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের কৃষক ভাইদের একটি বড় অভিযোগ হলো তারা কীটনাশক প্রয়োগ করেও এসব পোকামাকড় দমন করতে পারছেন না । যার দরুন একদিকে ফসলের ফলন কমে যাচ্ছে অন্যদিকে ফসল উতপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। আবার সবজি ফসলে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ সমস্যা উত্তরনের জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট এর বিজ্ঞানীরা একটি পরিবেশবান্ধব আইপিএম প্যাকেজ প্রনয়ন করেছেন।
নিরাপদ ফসল উৎপাদনে আইপিএম প্যাকেজে অর্ন্তভূক্ত দমন ব্যবস্থাগুলো হলো রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার, যান্ত্রিক দমন, জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার, জৈব বালাইনাশক ব্যবহার, উপকারী পোকামাকড়ের ব্যবহার, সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার, পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ পদ্ধতি প্রভৃতি। আইপিএম ব্যবস্থাপনায় কার্যকরীভাবে ক্ষতিকর পোকামাকড় দমন করা যায়।


➤১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

পরবর্তীতে যা যা করবেন
১. আগাম বীজ বপন করা
২. সুষম সার ব্যবহার করা
৩. সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করা

যোগাযোগ 

কৃষি বিষয়ক যে কোন সমস্যার সমাধান ও ফসলের রােগবালাই এবং পােকামাকড় দমনে সঠিক পরামর্শ দিতে আপনার পাশে রয়েছে ekrishi24.অথবা নিকটস্থ “কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র (ফিয়াক)” অথবা “উপ সহকারী কৃষি অফিসার” এর সাথে যোগাযোগ করুন।
Next Post
No Comment
Add Comment
comment url