ভূট্রা চাষ পদ্ধতি:ভূট্রা চাষ/উৎপাদন কৌশল
ভুট্টা চাষ পদ্ধতি
ekrishi24: পৃথিবীতে খাদ্য উৎপাদনের দিক থেকে গমের পরেই ভুট্টার স্থান। ভুট্টার দানা মানুষের
খাদ্য এবং পশুখাদ্য হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।আবার ভুট্টার গাছ ও সবুজ পাতা
উন্নত মানের গোখাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ভুট্টার খড় এবং পাতা জ্বালানী
হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এবং শিল্পে প্রক্রিয়াজাত করে অনেক ধরনের সামগ্রী
প্রস্তুতে ভুট্টা একটি মূল্যবান কাচামাল। হাসমুরগী ও মাছের খাদ্য হিসাবেও এর
যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। শুধু পশু, মুরগীর খামার ও মাছের খাবারের চাহিদা মিটানোর
জন্যই বছরে প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার টন ভুট্টা দানা প্রয়োজন। তাই ভুট্টা চাষ পদ্ধতি |(Maize cultivation method) একটি লাভজনক জনপ্রিয় ফসল হতে পারে।
![]() |
| ভুট্টা চাষ পদ্ধতি |
ভুট্টার পুষ্টিমানঃ
ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টার পুষ্টিমান বেশী। এতে প্রায় ১১% আমিষ জাতীয় উপাদান
রয়েছে। এছাড়া হলদে রংয়ের ভুট্টা দানায় প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৯০মিলিগ্রাম
ক্যারোটিন বা ভিটামিন এ থাকে।এবং ভূট্টার রাসায়নিক গঠনের মধ্যে রয়েছে পানি ১২-
১৪%, আমিষ ৯-১১%, তৈল ৩-৫%, শর্করা ৫৫-৬৫%, চিনি ১-২%, পেন্টোসান ৫-৭%, আশ ২-৩% ও
খনিজ ১-৩%। ভুট্টার ভ্রুনে প্রায় ৩৫% তেল, ২০% আমিষ ও ১০% খনিজদ্রব্য
রয়েছে।
ভুট্টার পরিচিতি
ভুট্টা চাষ পদ্ধতি(Maize cultivation method) একটি অধিক ফলনশীল দানা শস্য। এর গাছ বর্ষজীবী গুল্ম। ভুট্টা গ্রামিনী
গোত্রের ফসল। এর একই গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল জন্মে। পুরুষ ফুল একটি মঞ্জরীদন্ডে
বিন্যস্ত হয়ে গাছের মাথায় বের হয়। স্ত্রী ফুল গাছের মাঝামাঝি উচ্চতায় কান্ড ও
পাতার অক্ষকোন থেকে বের হয়। ভুট্টার ফলমঞ্জরীকে মোচা বলে।
ভুট্টা পরপরাগায়িত উদ্ভিদ। স্ত্রীফুল নিষিক্ত হলে মোচার ভিতরেও দানার সৃষ্টি
হয়। ভুট্টার দানা ক্যারিওপসিস জাতীয় ফল। এতে ফলত্বক ও বীজত্বক একসাথে মিশে
থাকে। তাই ফল ও বীজ আলাদাভাবে চেনা যায় না।
ভুট্টার গঠনঃ
ক) ভুট্টার স্বভাবঃ
১০ জোড়া ক্রোমোসোম বিশিষ্ট একবীজপত্রী শক্ত, এক কান্ড বিশিষ্ট বীরুৎ। ১-৪ মিটার
উচ্চ, কখনো কখনো
কুশিও হয়। ভুট্টা পরপরাগী।
খ) ভুট্টার মূলঃ
গুচ্ছ মুলতন্ত্র, ভ্রুনমুল থেকে প্রথমে সেমিনেল মুল জন্ম নিলেও প্রায় দুসপ্তাহ
পরে তা নষ্ট হয়ে যায় (হাইপোকোটাইলের গোড়া থেকে উৎপন্ন হওয়া শিকড়কে সেমিনেল
শিকড় বলে) তখন এক গুচ্ছ অস্থানিক মুল সর্বনিম্ন পর্ব থেকে উৎপন্ন হয়। অনেক মূল
পার্শ্বদিকে ০.৫ - ১.০ মিটার বিস্তার লাভ করার পর গভীরে প্রবেশ করতে থাকে।
অধিকাংশ মুল মাটির ৩০-৪০ সেমি গভীরে ও পার্শ্বে ১০-২০ সেমি বিস্তৃত হয়। অন্যান্য
মুল ২-৩ মিটার পর্যন্ত মাটির গভীওে প্রবেশ করতে পারে। কান্ডের বৃদ্ধি শুরু হলে
গাছকে খাড়া রাখার জন্য গোড়ার ২-৩টি পর্ব থেকে কিছু ঠেসমুল জন্ম নেয়। এই
মুলগুলি বেশ মোটা ও বর্ন সবুজ বিধায় আংশিক সালোকসংশ্লেষন সম্পন্ন করতে পারে।
মাটিতে প্রবেশ করে এগুলি স্বাভাবিক মুলের ন্যায় কাজ করে।
গ) ভুট্টার কান্ডঃ
কান্ড নিরেট ভরা, ৩-৪ সেমি ব্যাসযুক্ত পর্ব ও পর্বমধ্য স্পষ্ট, পর্বের সংখ্যা
৮-১০টি হতে পারে, তবে সাধারনতঃ ১১-১৫টিও থাকে। নীচের পর্বমধ্য খাট, নীচের ৩টি
পর্বের কুড়ি থেকে কখনো কুশি জন্ম নিতে পারে। মাঝের বা উপরের দিকের পর্বের কুড়ির
মধ্যে ২-৩টি কুড়িতে মোচা জন্মে।
ঘ) ভুট্টার পাতাঃ
একান্তর, প্রতিটি পর্ব থেকে একটি করে জন্মে, ২ সারিতে সাজানো, সংখ্যায় ৮-২১ টি,
প্রতিটি পাতার আকার সাধারনতঃ ৩০-১৪০*৫-১০ সেমি। ভুট্টা পাতার ধার কিছুটা ঢেউ খেলানো,
মধ্যশিরা স্পষ্ট, লিগিউল বর্নহীন, ৪-৫ মিমি লম্বা।
ঙ) ভুট্টার পুষ্প মঞ্জুরী
ভুট্টা গাছ সহবাসী, অর্থাৎ পুং ও স্ত্রী পুস্পমঞ্জুরী একই গাছে পৃথক পৃথকভাবে
অবস্থিত। পুং পুষ্পমঞ্জুরী গাছের মাথায় জন্মে, প্রায় ২০-৩০ সেমি লম্বা
শাখাযুক্ত। প্রধান শাখায় অনুমঞ্জুরী বেশ কয়েকটি সারিতে সাজানো থাকে, তবে
পার্শ্ব শাখায় কেবল দুই সারিতে সাজানো থাকে। সব সময় অনুমঞ্জুরী জোড়া জোড়া
সাজানো থাকে। একজোড়া অনুমঞ্জুরীর একটি বৃত্তহীন, অপরটিতে ছোট বৃত্ত আছে।
অনুমঞ্জুরী ৮-১২ মিলি লম্ব, প্রতিটিতে সম আকারের ২টি গ্লম থাকে।
এর ভিতরে ২টি পুষ্পিকা থাকে এবং এদের মধ্যে
উপরেরটি প্রথম পরিপক্ক হয়। প্রতিটি পুষ্পিকায় লেমা, পেলিয়া, তিনটি পুংকেশর এবং
একটি অপুর্নাঙ্গ স্ত্রী স্তবক থাকে। পুংপুষ্পঞ্জুরীকে টাসেল বলে। একটি টাসেলে
১০০০- ১৫০০টি অনুমঞ্জুরী থাকে।
স্ত্রী-পুষ্পমঞ্জুরী ১৪ একটি অপরিবর্তিত মঞ্জুরী। কান্ডের মাঝামাঝি বড় পাতা
বিশিষ্ট কোন পর্বের কুড়ি থেকে জন্ম নেয়। প্রতি গাছে সাধারনতঃ ১-৩ টি
পুষ্পমঞ্জুরী জন্মে। স্ত্রী পুষ্পমঞ্জুরীকে শীষ বা মোচা বলে। মোচার গোড়ার দিকে
কয়েকটি সংক্ষিপ্ত পর্ব থাকে। সর্বনিম্ন পর্ব থেকে মোট ৮-১২টি পরিবর্তিত পাতা
জন্মে মোচাকে আবৃত করে রাখে বিধায় এদেরকে খোসা বলা হয়। এই খোসা মুলতঃ পত্রখোল
দ্বারা গঠিত এবং পত্র ফলক অত্যন্ত ক্ষুদ্র এবং কখনো একেবাওে অনুপস্থিত।
কবের কেন্দ্রীয় অক্ষ পরিবর্তিত মোটা কান্ড এবং সাদা থেকে হলুদ বা লালচে।
অনুমঞ্জুরী বৃন্তহীন এবং একজোড়া গ্রুম দ্বারা আবৃত। প্রতিটি অনুমঞ্জুরীতে
একজোড়া পুষ্পিকা থাকে। এদের উপরেরটি বন্ধ্যা এবং নীচেরটি উর্বর। উর্বর ফুলে খাটো
ও চওড়া লেমা পেলিয়া বিদ্যমান, তবে লডিকিউল সাধারনতঃ অনুপস্থিত। কখনো অত্যন্ত
সংক্ষিপ্ত পুংকেশর বিদ্যমান। একটি গর্ভাশয় ও লম্বা সুতার ন্যায় পরাগদত্ত থাকে
যা সিল্ক নামে পরিচিত। সিল্ব সবুজ, হলদে, লালচে, বাদামী ও পিঙ্গল হতে পারে। ৩০-৪০
সেমি লম্বা সিল্ক খোসার বাইওে চলে আসে। এদেও গায়ে বহুকোষী রোম থাকে এবং প্রায়
সমস্ত দেহ পরাগগ্রাহী। পরাগগ্রহন ক্ষমতা প্রায় ২ সপ্তাহ থাকে।
কেবল পড় জাতীয় ভুট্টায় গ্লম ধানের ন্যায় ভুট্টাকে আবৃত করে রাখে।কবের
দৈর্ঘ্যে ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় প্রাগঐতিহাসিক ভুট্টায় মাত্র ২.৫ সেমি
থেকে অনেক উন্নত সংকর জাতে প্রায় ৫০ সেমি লম্বা হতে দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ
ক্ষেত্রে ১০-৪০ সেমি হতে দেখা যায়। কবের ব্যাস ৩-৭.৫ সেমি।
ভুট্টার ফল ও বীজ
ভুট্টার ফলই বীজ। উদ্ভিদতত্বে তা কেরিওপসিস নামে পরিচিত হলেও কৃষিতত্বে কার্নেল
বা দানা নামে পরিচিত। কবে বীজ সারিতে লম্বালম্বিভাবে সাজানো থাকে। তবে অধিকাংশ
ক্ষেত্রে সারির সংখ্যা ১৬,১৮ বা ২০। একটি করে মোট বীজের সংখ্যা ৩০০-১০০০টি। বীজের
বর্ন সাদা, হলদে, লাল, পিঙ্গল ও কালচে হতে পারে। আকার, ভৌত এবং রাসায়নিক গঠনেও
বিভিন্ন জাতের বীজে বেশ তারতম্য রয়েছে। গড়ে ওজন ভিত্তিতে বীজ আবরন ৫-৭%, শস্য
৮০-৮২% এবং ভ্রুন প্রায় ১০% থাকে। এছাড়া ওজন ভিত্তিতে কব ২০% এবং বীজ ৮০% হয়।
ভুট্টার পরাগায়ন
ভুট্টা মুলত পর পরাগায়িত। বায়ু এবং মাধ্যাকর্ষন শক্তির দ্বারা পরাগায়ন ঘটে।
ভুট্টার পরাগরেনু গর্ভাশয় পরিপক্ক হওয়ার পূর্বে পরিপক্ক হয়। প্রথমে মাঝের ফুল
ফোটে। সুর্যোদয়ের সাথে সাথে ফুল ফোটা শুরু হয় এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে শেষ হয়।
অনুমঞ্জুরীর উপরের ফুলটি প্রথমে ফোটে। পরাগরেনু প্রায় ২৪ ঘন্টা জীবন্ত থাকে, তবে
অত্যন্ত গরমে আগেই সজীবতা হারিয়ে ফেলে। একটি টাসেল থেকে প্রায় ২-১৪ দিন।
পরাগরেনু ঝরে। প্রতিটি টাসেলে ২০- ৫০ লক্ষ রেনু থাকতে পারে।
অনুমঞ্জুরীর গোড়ার ফুলগুলি প্রথমে পরিপক্ক হয় এবং ৩-৫ দিনের মধ্যে সিল্ক বের
হয়ে আসে। সিল্ক প্রায় ১৪ দিন পরাগগ্রাহী থাকে। গড়ে প্রতিটি সিল্কের জন্য ২০-৩০
হাজার পরাগরেনু জন্মালেও অনেক সময়ে বিশেষতঃ পরিবেশের কারনে পরাগরেনু থেকে সিল্ক
বঞ্চিত থাকে। একারনে মোচার অনেক স্থানে বীজ হয় না।
ভুট্টার উৎপাদন মৌসুম ও বীজ বপনের উপযুক্ত সময়
• রবি মৌসুম: ১৪৫-১৬০ দিনের ফসল । ১লা কার্তিক হতে পৌষের মাঝামাঝি (১৫ অক্টোবর-৩১
ডিসেম্বর) পর্যন্ত বীজ
বপনের উপযুক্ত সময় ।
• খরিপ-১ মৌসুম: ১১০-১২৫ দিনের ফসল । ১লা ফাল্গুন হতে চৈত্রের মাঝামাঝি (১৫
ফেব্রুয়ারি-৩১ মার্চ) পর্যন্ত বীজ বপনের উপযুক্ত সময় ।
ফসলের জীবনকাল নির্ভর করে- জাত,বীজ বপনের সময় এবং তাপমাত্রার উপর।
ভুট্টার জাতঃ
•> বর্ণালী
•> শুভ্রা,
•> খই ভুট্টা
•> মোহর
•> বারি ভুট্টা-৫
•> বারি ভুট্টা-৬।
অন্যান্য ফসলের মতই অধিক ফলন লাভের আশায় ভূট্টার দেশী জাতের চেয়ে হাইব্রিড
জাতের প্রতি মানুষ খুব আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ভুট্টার উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতসমূহ
•> অল রাউন্ডার
•> সি-১৯২০ ও সি- ১৮১৬
•> হাইসন ৭১৭
•> মধু ২, ৩ ও ৪
•> বিজয়
•> পাইওনিয়ার ৩০ ভি ৯২
•> পাইওনিয়ার পি ৩৩৯৬
•> এলিট
•> এন কে 80
•> সানসাইন
•> মিরাকেল
•> উত্তরণ ২
•> ৯৮১
•> ৯০০ এম
•> ৯৯৯ সুপার
•> ৯০০ এম গোল্ড
•> পাইনাল
•> প্যাসিফিক ৯৮৪
•> টাইটান
•> ডেনালি
•> সিপি ৮০৮
•> পিনাকেল
•> ৯৮৭ কে
•> ৯১২০
•> বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৯ এবং অন্যান্য
ভুট্টার বীজের হার
• প্রতি শতাংশে ৮০ গ্রাম (প্রায়) বা ৩৩৭টি ভুট্টার বীজ প্রয়োজন।
• প্রতি বিঘায় (৩৩ শতাংশে) ২.৫-২.৭৫ কেজি (প্রায়) বা ১১,১৩৩টি ভুট্টার বীজ প্রয়োজন।
• প্রতি একরে ৭.৫-৮.০ কেজি (প্রায়) বা ৩৩,৭৩৮টি ভুট্টার বীজ প্রয়োজন।
• প্রতি হেক্টরে ২০-২৮ কেজি (প্রায়) বা ৮৩,৩৩৩টি ভুট্টার বীজ প্রয়োজন।
■ ভুট্টার বীজ গজানোর হার শতকরা ৯০ ভাগ এর উপরে বিবেচনা করা উত্তম।
■ ভুট্টার বীজের আকার ছোট বা বড় হওয়ার কারণে বীজের পরিমাণ কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে।
ভুট্টার জমি নির্বাচন এবং প্রস্তুতকরণ
ভুট্টার উপযোগী জমিঃ
পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্হাযুক্ত উর্বর বেলে দোঁআশ, এটেল দোঁআশ মাটি ভুট্টা চাষের
জন্য উপযোগী। পরিমানমত সার ব্যবহার করা হলে বেলে দোঁআশ মাটিতেও ভুট্টা উৎপাদন
সম্ভব। পানি আটকে থাকে না এমন এটেল মাটিতেও ভূট্টার চাষ করা যায়। খরিপ মৌসুমে
যেখানে বৃষ্টির পানি জমে না থাকে এমন জমি ভুট্টা চাষের উপযোগী। তবে ভুট্টা চাষের
জন্য মাটির পিএইচ ৬.৫- ৭.০ এর মধ্যে থাকা বাঞ্চনীয়।
ভুট্টার জমি তৈরীঃ
ভুট্টার জমি তৈরীর জন্য মাটিভেদে সাধারনত ৪-৬ টি চাষ দেয়ার প্রয়োজন হয়। মাটি
ভালভাবে চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরে করতে হবে। জমির উপরিভাগ সমান থাকা আবশ্যক। জো
অবস্থায় জমি প্রস্তুত করতে হয়। উত্তম ফলন প্রাপ্তির জন্য জমি যথাসম্ভব গভীরভাবে
চাষ দিতে হবে এবং যাবতীয় আবর্জনা মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ১০-১৫ দিন সময়ের
মধ্যে জমি প্রস্তুত কাজ সম্পন্ন করলে আগাছা দমন সহজতর হয়।
ভুট্টার সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবেঃ-
• জৈব সার (চাষের সময়) ২০ মন
• ইউরিয়া (সাদা সার) (শেষ চাষে) ২৫ কেজি।
• টিএসপি (মাটি সার) (শেষ চাষে) ৩৭ কেজি।
• এমওপি (পটাশ/লাল সার) (শেষ চাষে) ২৭ কেজি।
• জিপসাম (গন্ধক সার) (শেষ চাষে) ৩০ কেজি।
• জিংক সালফেট (দস্তাসার) (শেষ চাষে) ২কেজি।
•বোরিক এসিড (বোরন সার) (শেষ চাষে) ৮০০ গ্রাম।
• ডলোচুন* (জমিতে অম্লভাব বেশি হলে বীজ লাগানোর ৭ দিন আগে চাষের সময় ব্যবহার করা উচিৎ) ১৩২ কেজি।
উপরি প্রয়োগ করতে হবেঃ-
• ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ (ভুট্টা গাছের ৬ পাতার সময়) ২৫ কেজি।
•ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ (ভুট্টা গাছের ১০ পাতার সময়) ২৫ কেজি।
জমি তৈরীর শেষ পর্যায়ে অনুমোদিত ইউরিয়ার এক তৃতীয়াংশ এবং টিএসপি, এমপি,
জিপসাম, জিংক সালফেট, বরিক এসিড ও গোবর সারের সবটুকু ছিটিয়ে জমি চাষ দিতে হবে।
সার ছিটানোর পর মই দিয়ে ভালভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি ইউরিয়া সমান
২ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। রবি মৌসুমে যখন গাছের পাতা ৪-৬টি হয় অর্থাৎ বীজ
গজানোর ২৫-৩০ দিন পর প্রথম কিস্তি এবং খরিপ মৌসুমে বীজ গজানোর ২০-২৫ দিন পর
ইউরিয়া সার প্রথম কিস্তি উপরি প্রয়োগ করতে হবে। চারার বয়স এক মাস না হওয়া
পর্যন্ত জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
রবি মৌসুমে ভুট্টার চারা গজানোর ৬০-৬৫ দিন পর এবং খরিপ মৌসুমে ৪০-৪৫ দিন পর ইউরিয়া সারের
দ্বিতীয় কিস্তি উপরি প্রয়োগ করতে হবে। বেলে দোয়াশ মাটিতে যেখানে পটাশ সারের
অভাব দেখা দেয় শুধুমাত্র সেখানেই এমপি সারের উপরি প্রয়োগ করতে হবে। এমপি সারের
উপরি প্রয়োগ ইউরিয়া সারের দ্বিতীয় কিস্তির সাথে করা যেতে পারে।
উপরি উল্লেখিত সমস্ত উপরি প্রয়োগকৃত সার ভুট্টার গাছের গোড়ার ৪-৫ সে.মি. দুরে দিয়ে
মাটির সাথে ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য
কম উর্বরা শক্তি সম্পন্ন জমিতে ইউরিয়া সার বেছাল ডোজ হিসাবে না দিয়ে চারা
গজানোর ৭-১০ দিন পর উপরি প্রয়োগ হিসাবে দেয়া যেতে পারে।
ভুট্টার সংরক্ষণশীল চাষ পদ্ধতি:
মাটির ‘জো’ অবস্থায় বেড প্লান্টার মেশিন দিয়ে বেড-নালা চাষ পদ্ধতিতে অথবা
সিড-ফার্টিলাইজার ড্রিল মেশিন দিয়ে স্ট্রিপ/ফালি চাষ পদ্ধতিতে ভুট্টার বীজ বপন
করা উত্তম । এই পদ্ধতি অনুশীলনের সুবিধা হলো-
• জমিতে কম সংখ্যক চাষ লাগে, ফলে মাটিতে রস সংরক্ষিত থাকে এবং দ্রুত ফসল বোনা
যায় বীজ, সার, সেচের পানি ও শ্রমিক কম লাগে।
• অর্থ সাশ্রয় হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায় ।
সারি-সারি এবং বীজ-বীজ রোপন দূরত্ব
• সারি থেকে সারির দূরত্ব ৬০ সে:মি: এবং বীজ থেকে বীজের দূরত্ব ২০ সে:মি:।
• বীজ ৫-৭ সে:মি: মাটির গভীরে স্থাপন করতে হবে (মাটির রসের উপর ভিত্তি করে)।
সারির শূণ্যস্থান পূরণে বিশেষ করণীয়:
বীজ বপনের দিনেই ২-৩ বর্গমিটার জমি পর্যাপ্ত জৈব সার মিশিয়ে নরম করে নিন এবং
৮-১০ সে:মি: দূরে দূরে ১টি করে বীজ পুতে রাখুন । ৫-৬ দিন পর মাটির ভিজা অবস্থায়
চারা উঠানোর যন্ত্র দ্বারা সাবধানে মাটি সহ চারা উঠিয়ে সারির শূণ্য স্থানে
বসিয়ে দিন এবং হালকা সেচ দিন ।
ভুট্টার আগাছা দমন
সংরক্ষণশীল চাষ পদ্ধতি:
স্ট্রিপ/ফালি চাষ অথবা বেড-নালা পদ্ধতিতে চাষ করলে প্রয়োজনে অনুমোদিত মাত্রায়
সঠিক আগাছানাশক ব্যবহার করতে হবে ।
ভুট্টার সাধারণ চাষ পদ্ধতি
ভুট্টার চারা গাছের ৩-৫ পাতা অবস্থায় ১ম বার আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
• রবি মৌসুমে: বীজ লাগানোর ৩০-৩৫ দিন পর
• খরিপ মৌসুমে: বীজ লাগানোর ২০-২৫ দিন পর
ভুট্টার গাছের ৮-১০ পাতা অবস্থায় ২য় বার আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং প্রয়োজনে চারার
গোড়ায় মাটি তুলে দিয়ে কেলি তৈরি করে দিতে হবে ।
• রবি মৌসুমে: বীজ লাগানোর ৫৫-৬৫ দিন পর
• খরিপ মৌসুমে: বীজ লাগানোর ৩৫-৪৫ দিন পর
ভুট্টার সেচ প্রদান
অধিক ফলনের জন্য মাটির রস সংরক্ষণ ক্ষমতার ভিত্তিতে ৩-৪টি সেচ প্রয়োজন হয়-
• চারা গাছের ৪-৬ পাতা অবস্থায় ১ম সেচ প্রদান
রবি মৌসুমে: বীজ লাগানোর ৩০-৩৫ দিন পর
খরিপ মৌসুমে: বীজ লাগানোর ২০-২৫ দিন পর
• গাছের ৮-১০ পাতা অবস্থায় ২য় সেচ প্রদান
রবি মৌসুমে: বীজ লাগানোর ৫৫-৬০ দিন পর
খরিপ মৌসুমে: বীজ লাগানোর ৩৫-৪৫ দিন পর
• ফুল আসার সময় ৩য় সেচ প্রদান (মোচা বের হওয়া পর্যন্ত)
রবি মৌসুমে: বীজ লাগানোর ৭০-৮০ দিন পর
খরিপ মৌসুমে: বীজ লাগানোর ৫৫-৬৫ দিন পর
• দানা বাঁধার সময় ৪র্থ/শেষ সেচ প্রদান (দানা বাঁধার পূর্ব পর্যায়)
রবি মৌসুমে: বীজ লাগানোর ১০০-১১০ দিন পর
খরিপ মৌসুমে: বীজ লাগানোর ৭০-৭৫ দিন পর
বি:দ্র: জমিতে পর্যাপ্ত ‘জো’/রস না থাকলে বীজ বপনের আগে এক বার সেচ দিতে হবে, এবং মাটিতে প্রয়োজনীয় ‘জো’/রস আসলে তখন বীজ লাগাতে হবে ।
ভুট্টার পোকামাকড়ঃ
কাটুই পোকা,কান্ডের মাজরা পোকা,জাব পোকা,ভুট্টার মোচার কীড়া। এইসমস্ত পোকা থেকে
ভুট্টার জমিকে রক্ষা করতে পাড়লেই কাঙ্ক্ষিত ভুট্টর ফলন পাওয়া যায়।
ভুট্টার রোগবালাইঃ
পাতার ব্লাইট বা পাতা ঝলসানো রোগ,কান্ড পচা রোগ,মোচা পচা ও দানা পচা রোগ,ভুট্টার
পাতার দাগ এবং মোজাইক ভাইরাস রোগ।এইসমস্ত রোগবালাই থেকে ভুট্টার জমিকে রক্ষা করতে
পাড়লেই কাঙ্ক্ষিত ভুট্টার ফলন পাওয়া যায়।
ভুট্টার মোচা সংগ্ৰহ
• মোচার খোসা খড়ের রং ধারণ করলে এবং পাতা
কিছুটা হলদে রং হলে বুঝতে হবে ভুট্টার মোচা সংগ্রহের
সময় হয়েছে।
• মোচা হতে দু’একটি দানা ছাড়িয়ে দানার মুখে
কাল দাগ দেখা গেলে ভুট্টার মোচা সংগ্রহ শুরু করতে হবে
• শরীরবৃত্তীয় ভাবে পরিপক্ক দানায় শতকরা
২০-২৫ ভাগ আর্দ্রতা থাকে, আর্দ্রতা মাপার যন্ত্রের
সাহায্যে আর্দ্রতা মেপে নিশ্চিত হয়ে ভুট্টার মোচা সংগ্রহ
শুরু করা যেতে পারে
• বর্ষা বা মেঘলা আবহাওয়ার কারণে ভুট্টার মোচা সংগ্রহ
করা সম্ভব না হলে মোচার সামান্য নিচে গাছের
কান্ড আলতোভাবে মচকিয়ে মোচাসহ মাটির দিকে
ঝুলিয়ে দিতে হবে যাতে মোচার ভিতর পানি প্রবেশ না করতে পারে
• শুকনো আবহাওয়ায় মোচা সংগ্রহ করতে হবে,ভুট্টার মোচা সংগ্রহের পর ঠান্ডা, শুকনা ও ছায়াযুক্ত স্থানে ছড়িয়ে রাখতে হবে
ভুট্টার মোচা থেকে দানা সংগ্রহ
সংগৃহীত ভুট্টার মোচার উপরিভাগের খোসা ছাড়িয়ে ফেলতে হবে, তবে মাঠ থেকে মোচা সংগ্রহের
সময়ই খোসা ছাড়িয়ে ফেলা ভাল
• মোচাগুলো ৩-৪ দিন রৌদ্রে ভালভাবে শুকাতে হবে যাতে মোচা থেকে দানা আলাদা করার
সময় দানায় শতকরা ১৪-১৬ ভাগ আর্দ্রতা থাকে
• শক্তি-চালিত মাড়াই যন্ত্রের সাহায্যে ভুট্টার মোচা থেকে দানা সংগ্রহ করা উত্তম, এতে
সময় কম লাগে এবং খরচ কম হয়
• অধুনা খোসাসহ মোচা মাড়াই করার যন্ত্র উদ্ভাবিত হয়েছে । ভুট্টার মোচা ভালভাবে শুকিয়ে
এই যন্ত্র দ্বারা দানা সংগ্রহ করলে শ্রম ও সময় কম লাগে এবং খরচ সাশ্রয় হয়
ভুট্টার দানা পরিষ্কার এবং শুকানো
• যন্ত্র চালিত ঝাড়াই মেশিন দ্বারা অথবা কুলা দিয়ে ঝেড়ে বা চালুনি দিয়ে চেলে
দানা ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে
• ভুট্টার দানা কয়েকদিন ভালভাবে রৌদ্রে এমনভাবে শুকাতে হবে যাতে দাঁত দিয়ে দানা
চাপদিলে ‘কট’ শব্দ করে ভেঙ্গে যায় এবং দানার উপর দানা ফেললে ঝনঝন
করে শব্দ হয়
এ সময় দানায় শতকরা ১২-১৪ ভাগ আর্দ্রতা থাকে যা দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য উত্তম,
প্রয়োজনে আর্দ্রতা মাপক যন্ত্রের সাহায্যে আর্দ্রতা মেপে নিশ্চিত হতে হবে ।
ভুট্টার ফলন
উপযুক্ত পরিবেশে ও যথাযথ যত্নে চাষ করলে রবি মৌসুমে গড়ে ভুট্টার ফলন হয় প্রায়
• বিঘা প্রতি ৪০-৪৭ মন
• একর প্রতি ১২১-১৪২ মন বা ৫.০-৫.৬ টন
• হেক্টর প্রতি ৩০০-৩৫২ মন বা ১২-১৪ টন পর্যন্ত
তবে লবনাক্ত মাটিতে ফলন কিছুটা কম হতে পারে । অন্যদিকে সর্বোচ্চ ফলন নির্ভর করে
হাইব্রিড জাত, মানসম্পন্ন বীজ, বপনের সময় এবং ফসল ব্যবস্থাপনার উপর ।
খরিপ মৌসুমে রবি মৌসুমের চেয়ে শতকরা প্রায় ১ ভাগ কম ফলন হয়ে থাকে
ভুট্টার দানা সংরক্ষণ
• খুব ভালকরে শুকানোর পর পাকা মেঝেতে, অথবা চাটাই, ত্রিপল বা পলিথিনের উপরে ৮-১০
ঘন্টা দানা বিছিয়ে রেখে স্বাভাবিক ঠান্ডা করতে হবে
• পরিষ্কার ছিদ্রমুক্ত ড্রাম অথবা প্লাষ্টিকের বস্তা
বা ব্যাগের ভিতরে মোটা পলিথিনের ব্যাগে ভুট্টার দানা ঢুকিয়ে এমন ভাবে রাখতে হবে
যাতে ভিতরে খালি জায়গা বা বাতাস না থাকে অর্থাৎ বায়ুরোধী করে মুখ ভালভাবে বন্ধ
করতে হবে
• দানা ভর্তি ড্রাম বা প্লাষ্টিকের বস্তা/ব্যাগগুলি বাঁশ অথবা কাঠের তৈরি
পাটাতনের উপর রাখতে হবে
• সংরক্ষিত ভুট্টার দানা বিভিন্ন পোকা যেমন - ভুট্টার শুড় পোকা,সরুই পোকা,
ইত্যাদি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে এজন্য প্রতি সপ্তাহে একবার দেখতে হবে এবং
ব্যাগের চারিপাশ পরিষ্কার করতে হবে
• দেশে প্রচলিত বাঁশের গোলায় একসাথে অনেক
ভুট্টার দানা সংরক্ষণ করা যায়, এ পদ্ধতি খুব সহজ ও খরচ সাশ্রয়ী এবং কৃষক ৪-৬
মাস পর্যন্ত এভাবে দানা সংরক্ষণ করতে পারে ।
দল ভিত্তিক ভুট্টার বিপনন বা গ্রুপ মার্কেটিং
বাংলাদেশে গ্রুপ মার্কেটিং এর অস্তিত্ব বেশ কিছুদিন আগে থেকেই গ্রাম পর্যায়ে
কিছু কিছু দেখা গেছে, তবে এর কোন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ এ পর্যন্ত দেখা যায় না।
বিপনন হচ্ছে এক গুচ্ছ কর্মকান্ড যা কোন পণ্য বা সেবা প্রস্তুতকারকের কাছ থেকে
ব্যবহারকারী পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
কো-অপারেটিভ মার্কেটিং
কো-অপারেটিভ গ্রুপ মার্কেটিং মুলতঃ এক ধরনের সমবায় ভিত্তিক বিপনন বা মার্কেটিং
এর মত গ্রুপ মার্কেটিং কোন নিয়মতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নয়।
গ্রুপ মার্কেটিং বলতে সাধারনতঃ আমরা যা বুঝি তা হলো এক দল কৃষক বা উৎপাদনকারী
তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার নিমিত্তে যখন একত্রিত হয়। ঐ দলের সদস্যরা
বাজারজাত করার বিভিন্ন দায়িত্ব নিজেরা ভাগাভাগি করে নেয়। তাদের এ স্পৃহা
সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে যা ফলত পণ্য বাজারজাতকরনের খরচ কমিয়ে
দেয় এবং উৎপাদনকারীদের উচ্চ মুনাফা লাভের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
বাংলাদেশে যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিক রূপপ্রাপ্ত সমবায় আন্দোলনের ইতিহাস খুব একটা ভাল
নয় তবে ইতিহাসের নেতিবাচক দিকগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে অগ্রসর হলে দিকনির্দেশনা
পাওয়া যাবে।
এ পদ্ধতির নেতিবাচক দিকগুলোর অন্যতম হচ্ছে পারস্পারিক অবিশ্বাস ও কোন্দল,
মধ্যস্বত্বভোগী বা স্থানীয় ব্যবসায়ী বা ফড়িয়া / ব্যাপারীদের প্রভাব ও
অর্থশক্তি। এক্ষেত্রে এরূপ সুবিধাভোগীরা বাধ সাধতে পারে বা অন্তরায় সৃষ্টি করতে
পারে। আমরা এনসিডিপি পরিবারভুক্ত কৃষক দলগুলোকে কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয়
প্রশিক্ষন, প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরি ও আর্থিক সহযোগীতা প্রদানের মাধ্যমে এ ধরনের
গ্রুপ মার্কেটিং এর চিন্তা ভাবনা করতে পারি। এতে করে নিঃসন্দেহে কৃষক বা
উৎপাদনকারীরা যথেষ্ট লাভবান হবেন।
কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের কৃষি বহুমুখীকরন ও নিবিড়করন প্রকল্প এ ধরনের বিপনন
কর্মকান্ড পরিচালনা করে চলেছে।
