পেয়ারা গাছে সার প্রয়োগের সঠিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি
পেয়ারার সার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি
পেয়ারা উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুর ফল। প্রায় সবরকম মাটিতেই চাষ করা যায় তবে জৈব
পদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ মাটি থেকে ভারী এঁটেল মাটি যেখানে পানি নিষ্কাশনের বিশেষ
সুবিধা আছে সেখানে ভাল জন্মে । ৪.৫ – ৮.২ অম্লক্ষারত্বের মাটিতে এটা সহজে জন্মে
।এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জায়গায় পেয়ারার চাষ হচ্ছে। চলুন জেনে নেই,
সঠিক সার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি
![]() |
| পেয়ারা গাছে সার প্রয়োগের সঠিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি |
গর্তের আকারঃ
ফিতা দ্বারা ২ ফুট × ২ ফুট × ১.৫ ফুট আকারের জায়গা মেপে নিয়ে গর্ত তৈরী করতে হবে ।
গর্ত থেকে গর্তের দূরত্বঃ
৪ থেকে ৬ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
গর্তে সারের পরিমাণঃ
১০-১৫ কেজি পচা গোবর/কম্পোস্ট, ২৫০ গ্রাম টিএসপি এবং ২৫০ গ্রাম পটাশ সার গর্তের
মাটির সাথে মিশাতে হবে। এভাবে সার প্রয়োগের পর গর্ত ভরাট করে ১০-১৫ দিন রেখে দিতে
হবে।
★★পেয়ারা গাছে সার প্রয়োগঃ-
প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি (ফাল্গুন) , মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) ও সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশ্বিন)
মাসে তিন কিস্তিতে সার প্রয়োগ করতে হবে। সার একবারে গোঁড়ায় না দিয়ে যতদূর পর্যন্ত
ডালপালা বিস্তার করেছে সে পর্যন্ত মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। নিচের ছকে
বিভিন্ন বয়সের গাছ প্রতি সারের পরিমাণ উল্লেখ করা হলো-
১-২ বছর বয়সী গাছের জন্য,
গোবর
১০-১৫ কেজি
ইউরিয়া ১৫০-২০০ গ্রাম
টিএসপি
১৫০-২০০ গ্রাম
এমওপি
১৫০-২০০ গ্রাম
৩-৫ বছর বয়সী গাছের জন্য,
গোবর
২০-৩০ কেজি
ইউরিয়া ২৫০-৪০০ গ্রাম
টিএসপি
২৫০-৪০০ গ্রাম
এমওপি
২৫০-৪০০ গ্রাম
৬ বছর বা তদুর্দ্ধ বয়সী গাছের জন্য,
গোবর
৪০ কেজি
ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম
টিএসপি ৫০০
গ্রাম
এমওপি
৫০০ গ্রাম
সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
সার প্রয়োগের পর ও খরার সময় বিশেষ করে গাছে গুটি আসার সময় পানি সেচ দিয়ে দিতে হবে।গাছের গোড়া থেকে আগাছা পরিস্কার করতে হবে এবং গোড়ার মাটি আলগা করে দিতে হবে।★★পেয়ারার পুষ্টির অভাবজনিত লক্ষনঃ-
১)নাইট্রোজেনের অভাবে পুরোনো পাতা হলুদ হয়ে যায়।পরবর্তীতে নতুন পাতায় লক্ষন দেখা যায়।
২)ফসফরাসের অভাবে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় না।পুরোনো পাতা প্রথমে বেগুনি রঙের হয়ে যায় পরবর্তীতে নতুন পাতা লক্ষন দেখা যায়।ফল দেরিতে পরিপক্ব হয়।ফলের গঠন ভালো হয় না।
৩)পটাশিয়ামের অভাবে পাতার কিনারা থেকে বিবর্ণ হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে পাতা কিনারা টিস্যু মারা যায়।ফলের ও বীজের আকার ছোট হয়,গাছের কান্ড দুর্বল হয়ে যায়।
৪)ক্যালসিয়ামের অভাবে কচি পাতায় প্রভাব ফেলে। নতুন পাতা ও মূলের বর্ধনশীল শীর্ষ মারা যায়।কচি পাতা কুকড়ে যেতেও দেখা যায়।
৫)ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে পুরোনো পাতা হলুদ হয়ে যায় কিন্তু শিরা সবুজ থাকে।বেশি অভাব হলে নতুন পাতা ঝরে যায়।এসিড সয়েলে ম্যাগনেসিয়ামের বেশি অভাব হয়।
৬)সালফারের অভাবে নতুন পাতা বিবর্ণ হয়ে যায় এবং ফল পরিপক্ব দেরিতে হয়।
৭)বোরনের অভাবে গাছের বৃদ্ধি আটকে যায়।বর্ধনশীল অঞ্চলে লক্ষন দেখা যায় এবং নতুন পাতা কুকড়ে যায় এবং মোটা হয়ে যায়।এবং পাতা ভঙ্গুর হয়ে যায়।
যোগাযোগ
কৃষি বিষয়ক যে কোন সমস্যার সমাধান ও ফসলের রােগবালাই এবং পােকামাকড় দমনে সঠিক পরামর্শ দিতে আপনার পাশে রয়েছে ekrishi24.অথবা নিকটস্থ “কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র (ফিয়াক)” অথবা “উপ সহকারী কৃষি অফিসার” এর সাথে যোগাযোগ করুন।
