ধানের ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট (BACTERIAL PANICLE BLIGHT) রোগ দমনে করণীয় ও তার প্রতিকার

ধানের ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট (BACTERIAL PANICLE BLIGHT) রোগ দমনে করণীয় ও তার প্রতিকার


ইদানিং মাঠ পর্যায়ে ধানের ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গান্ধির আক্রমণ অথবা হট ও কোল্ড ইনজুরী বলে অনেকেই মনে করছেন।কোন কিছু বোঝার আগেই ধানের মারাত্নক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তাই এ রোগ দ্রুত ছড়ানোর আগেই আমাদের দমন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে হবে।


ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট ব্যাকটেরিয়া জনিত দানা পঁচা রোগ বা দানা ঝলসানো রোগ নামেও পরিচিত।ব্যাকটেরিয়াটি হলুদ পিগমেন্টেড বিষাক্ত টক্সোফ্লাভিন উপাদান নিঃসৃত করে ফলে এই রোগ ছড়ায় তাছাড়া বাতাসের আদ্রর্তা ৮০ শতাংশের উপরে হলে,ঘন করে চারা রোপন করলে ও অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহারে এ রোগ বেশি হয়।
ধানের ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট (BACTERIAL PANICLE BLIGHT) রোগ দমনে করণীয় ও তার প্রতিকার 


ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট রোগ পরিচিতিঃ

🔥🔥ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট ব্যাকটেরিয়া জনিত দানা পঁচা রোগ বা দানা ঝলসানো রোগ নামেও পরিচিত।ব্যাকটেরিয়াটি হলুদ পিগমেন্টেড বিষাক্ত টক্সোফ্লাভিন উপাদান নিঃসৃত করে ফলে এই রোগ ছড়ায় তাছাড়া বাতাসের আদ্রর্তা ৮০ শতাংশের উপরে হলে,ঘন করে চারা রোপন করলে ও অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহারে এ রোগ বেশি হয়।



ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট রোগের কারনঃ

🔥🔥Burkholderia glumae নামক এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব।


ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট রোগের লক্ষণঃ

☔⛱️ধানের শীষ বের হ‌ওয়ার সময় ও দানা গঠনের সময় কোন পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই এই রোগের লক্ষণ দেখা যায়। শিষের ছোট ছোট ধান গুলো সঠিকভাবে দানা বাধতে পারে না এবং চিটা হয়ে যায় তবে শিষের সকল দানা গুলো চিটা হয় না। আক্রান্ত ধানের দানা গুলো ধূসর/কাল/গোলাপী রং ধারণ করে।


শিষে চিটা হওয়ার ফলে ওজন থাকে না বিধায় শিষগুলো খাড়া হয়ে থাকে। সংক্রমিত শিষের নিচের অংশ সবুজ থাকে। মাঝে মাঝে খোলপচা বা চারা ঝলসানো রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।


 

ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইটের ক্ষতির ধরণ:

🔥🔥ধানের শীষ দুধ আসার আগেই আংশিক বা অধিকাংশ চিটা হয়, কিন্তু মাজরায় আক্রান্তের মতো সাদা শীষ হয় না, এমনকি টান দিলে মাজরায় কাটা সাদা শীষের মত সহজে উঠেও আসে না। গান্ধি পোকায় ধানের দুধ অবস্থায় আক্রমণ করলে ধানে যেমন কালচে দাগ পড়ে, ক্ষতির লক্ষণ কিছুটা তেমনই তবে এতে ছিদ্র থাকে না। ঝড়ো বা ঠান্ডা ও গরম আবহাওয়ায় এই রোগ ছড়ায়।



ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট কিভাবে ছড়ায়ঃ

🎭🧭ব্যাকটেরিয়াগুলো ধান গাছের পাতা এবং খোলে অবস্থান করে এবং তারা প্রতিকুল পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারে। ধানগাছ বড় হওয়ার সাথে সাথে ব্যকটেরিয়াগুলো গাছের উপরের দিকে উঠতে থাকে। ব্যাকটেরিয়াটি ধানের শিষ বের হওয়ার সাথে সাথে সেখানে আক্রমন করে। ফুলের রেনূ গুলো নষ্ট করে ফলে ধানের দানা গুলো চিটাতে পরিনত হয়। ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট সাধারণত গরম ও আর্দ্র আবহাওয়াতে বেশি ছড়ায়। যখন দিনের তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর উপরে এবং রাতের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে এরকম আবহাওয়া এই রোগ ছড়ানোর জন্য উপযুক্ত। এছাড়া অতিরিক্ত নাইট্রোজেন ব্যবহার এই রোগের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।




ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট রোগের বাহকঃ

🎭ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট একটি বীজ বাহিত রোগ। রোগ আক্রান্ত বীজ হতে চারা উৎপাদন করে আবাদ করলে তা নিয়ন্ত্রনের বাস্তবিক কোন উপায় নেই।তাই রোগ আক্রান্ত বীজ হতে চারা উৎপাদন করা যাবে না।



ব্যাকটেরিয়াল পেনিকেল ব্লাইট রোগের দমন ব্যবস্থাপনা: 


সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনাঃ

🛡️বীজ বপনের পূর্বে ৫ থেকে ৬ দিন কড়া রোদে বীজ শুকিয়ে নেওয়া।


🛡️আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি যেমন বীজ বপনের পূর্বে তা শোধন করা,আদর্শ বীজতলায় বীজ বপন করে সঠিক বয়সের চারা রোপন ও রোপনের সময় লাইন ও লোগো পদ্ধতি অনুসরণ করে সঠিক মাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহার করা।


🛡️রোগ প্রতিরোধী জাতের চাষাবাদ করা। জাপান ইতোমধ্যে ৯ টি এবং আমেরিকা ৬ টি BPB প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন করেছে।



🛡️অক্সালিনিক এসিড দিয়ে বীজ শোধন করা। (বাংলাদেশে এ জাতীয় বালাইনাশক বাজারে নেই)



🛡️জমিতে জৈব সার(যেমন-ভার্মি কম্পোস্ট, ট্রাইকো কম্পোস্ট, কুইক কম্পোস্ট, খামারজাত সার, মুরগির লিটার ইত্যাদি) ব্যবহার করা।


🛡️অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার না করা।এ সারের প্রয়োগ কমিয়ে সুষম সার ব্যবহার করা।


🛡️জমিতে পর্যাপ্ত পটাশ সার এর প্রয়োগ করতে হবে যা এ রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে।



রাসায়নিক দমন ব্যবস্থাপনাঃ 

🔑৬০ গ্রাম এমওপি + ২.৫ গ্রাম চিলেটেড দস্তা + ৬০ গ্রাম থিওভিট/কুমুলাস ডি এফ বা ৮০% সালফার আছে এমন কোনো সালফার পণ্য ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে কাইচ থোড় অবস্থায় শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে।


🔑ব্যাকটেরিসাইড- কাসুগামাইসিন + বিসমারথিওজল (কিমিয়া, ব্যাকটোবান, ব্যাকট্রল, টিমসেন, সানপোমা, ব্যাকটাফ ইত্যাদি) অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে।


🔑কপারঅক্সিক্লোরাইড (কপার ব্লু) , কাসুগামাইসিন (কাসুমিন ২%) , বিসমার্থিওজল (ব্যকট্রোবান), ক্লোরোআইসোব্রমাইন সায়ানুরিক এসিড (ব্যকটাফ) (বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যায়) এ জাতীয় বালাইনাশক প্রয়োগ করে এই রোগ নিয়ন্ত্রন করা যায়।



যোগাযোগঃ

🚹🚹কৃষি বিষয়ক যে কোন সমস্যার সমাধান ও ফসলের রােগবালাই এবং পােকামাকড় দমনে সঠিক পরামর্শ দিতে আপনার পাশে রয়েছে ekrishi24.অথবা নিকটস্থ “কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র (ফিয়াক)” অথবা “উপ সহকারী কৃষি অফিসার” এর সাথে যোগাযোগ করুন। (ফিয়াক)” অথবা “উপ সহকারী কৃষি অফিসার” এর সাথে যোগাযোগ করুন।


Next Post Previous Post
2 Comments
  • AR Khan
    AR Khan ২০ অক্টোবর, ২০২২ এ ৯:৩৪ PM

    এটা কপি পোস্ট। পোস্ট কপি করবেন ঠিক আছে অন্তত ক্রেডিট তো দিতে পারতেন।
    এই পোস্ট টি আমি সর্বপ্রথম লিখি ২০/১০/২০২০ তারিখে। আমার সাইট https://smartagriculture.xyz/%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BE/

    • AR Khan
      AR Khan ২০ অক্টোবর, ২০২২ এ ৯:৩৮ PM

      দুখিঃত প্রথম প্রকাশের তারিখ টা হবে ২৩/১০/২০২০

Add Comment
comment url