সরিষার জাব পোকা দমনের উপায় Mustard Aphids. #জাবপোকা।
সরিষার জাব পোকা দমনের উপায়
ekrishi24.com: যখন সরিষার হলুদ ফলে মুখরিত ফসলের মাঠ। ঠিক তখনই সরিষায় জাব পোকা (Aphids of Mustard) আক্রমণ হয়ে থাকে। স্বল্প মেয়াদী জাত (বারি সরিষা-৯, ১৪, ১৫ ও ১৭) নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বপন করলে জাব পোকার আক্রমন শতকরা ৫০-৭০ ভাগ কম হয়। মাঠ এবং চারপাশের আগাছা দমন সহ প্রাকৃতিক শত্রুর আধিক্য বাড়ানো ও সংরক্ষণে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপেই সরিষার জাব পোকা দমন করা সম্ভব হয়।
![]() |
| সরিষার জাব পোকা (Mustard Aphid) দমন পদ্ধতি |
জাব পোকার পরিচিতিঃ
সরিষার জাব পোকা/এফিড (Mustard Aphid Lipaphis erysimi)। খুব ছোট সবুজাভ সাদা, নরম দেহ বিশিষ্ট। পূর্ণাঙ্গ ১.৫-৩ মিলিমিটার লম্বা, নরম ও ডিম্বাকৃতি শরীর, ফ্যাকাশে সবুজ বা হালকা হলুদ রঙের, নরম দেহ বিশিষ্ট। সরিষার জাব পোকা সাধারণত বাড়ন্ত পর্যায়ে আক্রমণ করে।
অনুকূল পরিবেশ
জাবপোকা প্রায় সারা বছরই বংশ বৃদ্ধি করতে পারে। তবে শীতকালে মেঘলা কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া জাব পোকার বংশ বৃদ্ধি ও আক্রমণের প্রধান সময়। ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি হতে সরিষার জাব পোকার সংখ্যা বাড়তে থাকে।
সরিষার ক্ষতির ধরণ বা লক্ষণ:
পূর্ণবয়স্ক ও বাচ্চা পোকা উভয়ই সরিষার পাতা, কান্ড, ফুল ও ফল হতে রস শোষণ করে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে ফুল ও ফলের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয় বিধায় গাছ দুর্বল ও হলুদ হয়। সরিষার পাতা কুঁকড়ে যায় এবং ফুলের কুড়ি ও কচি ফল ঝরে যায়।
সরিষার জাব পোকা এক ধরনের রস নিঃসরণ করে, ফলে তাতে সুটিমোল্ড ছত্রাক জন্মে এবং আক্রান্ত অংশ কালো দেখায়। এজন্য ফল ঠিকমত বাড়তে পারে না, সরিষার বীজের আকারে ছোট হয়। বীজে তেলের পরিমাণ কমে যায়। ফল ধারণ অবস্থায় বা তার আগে আক্রমণ হলে এবং প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সম্পূর্ণ ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে।
সরিষার জাব পোকার প্রতিকার:
আগাম চাষ আশ্বিনের শেষ ভাগ ও মধ্য-কার্তিক (অক্টোবর) অর্থাৎ আগাম বপন করলে সরিষার জাব পোকার আক্রমণ আংশিক কম থাকে।
শতকরা ২০-৩০ ভাগ গাছে জাবপোকা দেখা গেলে গেলে সঠিক বালাইনাশক, সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক সময়ে ও সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করলে সরিষার জাব পোকার দমন করা যায়।
জৈবিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে দমনঃ
সরিষা আক্রান্ত ডগাগুলি প্রথম অবস্থায় কেটে ফেলে দিতে হবে। অতপড় কেরোসিন মিশ্রিত ছাই পাতায় বা জাব পোকার উপর ছিটিয়ে প্রতিরোধ করা য়ায়। আধাভাঙ্গা নিমবীজের পানি (১ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম নিমবীজ ভেঙ্গে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে ছেঁকে নিতে হবে) আক্রান্ত গাছে ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করলে পোকা নিয়ন্ত্রন করা যায়। অথবা ৫০ গ্রাম আধা ভাংগা নিমবীজ ১ লিঃ পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে সাথে ২-৩ গ্রাম ডিটারজেন্ট সাবান মিশিয়ে ৭ দিন অন্তর ২ বার ছিটাতে হবে।
রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমনঃ
=) আক্রমণ বেশি হলে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক ( যেমন ইমিটাফ/ এডমায়ার/ টিডো/বাম্পার/ গেইন/ প্রিমিয়ার/ অটোমিডা) ৭-১০ মি.লি. ( ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে) ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন।
=) এসিফেট ৭৫এসপি (এসাটাফ/ টিডফেট/ফরচুনেট)১.৫ গ্রাম/লিটার পানি স্প্রে।
=) প্রতি গাছে ৫০ টির বেশি পোকা থাকলে ম্যালাথিয়ন-৫৭ ইসি বা সুমিথিয়ন-৫৭ ইসি বা ফলিথিয়ন-৫৭ ইসি বা একোথিয়ন-৫৭ ইসি ডায়াজিনন ৬০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে বিকালে সেপ্র করতে হবে। সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস।
নোটঃ
সরিষার জাব পোকা থেকে ফসলকে বাড়াতে পরিছন্ন চাষাবাদ করুন। নিয়মিত ফসল পর্যবেক্ষন করতে হবে।
