আলুর পাতা মোড়ানো (Potato Leaf Roll Disease) রোগ দমন ও তার পরিচিতি | আলুর রোগ
আলুর পাতা মোড়ানো (Potato Leaf Roll Disease) রোগ দমন ও তার পরিচিতি
ekrishi24: পাতা মোড়ানো রোগ আলুর অনেক ক্ষতি করে। এ রোগের আক্রমণে আলুর ভালো ফলন
তেমন হয় না। এতে আনেক চাষিই হতাশ হয়। তাই ভালো ফলন পেতে হলে আলুর পাতা মোড়ানো রোগ
দমনসহ বিভিন্ন রোগ দমন সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে।
|
|
| আলুর পাতা মোড়ানো (Potato Leaf Roll Disease) রোগ দমন ও তার পরিচিতি | আলুর রোগ |
রোগের পরিচিতিঃ
আলুর পাতা মোড়ানো রোগ Potato Leaf Roll Disease ভাইরাসজনিত রোগ।জাবপােকা
দ্বারা সংক্রমণ হয়।এটি ফসলের বাড়ন্ত অবস্থায় আক্রমণ করে।
আক্রমণের সময়ঃ
ফসলের বৃদ্ধিকালে যখন ভাইরাসবাহী জাবপােকা
খায় এবং ফসল আক্রান্ত হয় তখন রােগটি প্রথম
ছড়ায়। যখন আক্রান্ত টিউবার লাগানাে হয় এবং
তার থেকে নতুন আলু গাছ জন্মায় তখন দ্বিতীয়
সংক্রমণ ঘটে। জাবপােকা সুস্থ গাছে নতুন
সংক্রমণ ছড়ায়। জাবপােকার জীবনচক্রে ভাইরাস
স্থায়ী, তাই সংক্রমণের সম্ভাবনা উচ্চ। ভাইরাসটি
ছড়ানাের জন্য বাহককে কমপক্ষে ২ ঘন্টা ধরে
ফসল খেতে হয়। আর্দ্র মাটি সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি
করে।
আলুর পাতা মোড়ানো রোগের লক্ষণঃ
আলুর পাতা মোড়ানো রোগের লক্ষণ ফসলের জাত,পরিবেশ এবং সংক্রমণের ধরণের উপর নির্ভর
করে। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ।জাবপােকা দ্বারা প্রাথমিক সংক্রমণ বেশিরভাগ কচি পাতায় দেখা যায়। এ রোগের আক্রমণে
গাছের পাতা খসখসে, খাড়া অথবা পাতার কিনারা উল্টো বা ওপরের দিকে মুড়ে যায়। এবং
শুষ্ক , ধূসর হয়। আগার পাতার রঙ হালকা সবুজ হয়ে যায়। কখনও কখনও আক্রান্ত পাতার
কিনার লালচে বেগুনি রঙের হয়। বয়স্ক পাতা অনমনীয় ভঙ্গুর হয়ে উল্টে যায় এবং
নিম্নভাগ বেগুনী লাল বর্ণের হয়। গাছ খাটো হয়। বোঁটা শক্ত হয়ে উল্টে যায়। যার
ফলে গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায় এবং সোজা হয়ে উপরের দিকে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে
আলুর সংখ্যা কমে যায় এবং আলুর আকার ছোট হয়।
আরও বিস্তারিত জানতে নিছে ক্লিক করুন
আলুর আগাম ধ্বসা (Early Blight of Potato ) রোগ দমন ও তার প্রতিকার
আলুর মড়ক বা নাবি ধ্বসা (Late Blight of Potato) রোগ দমন ও প্রতিকার
প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থাঃ
সুস্থ ফসল থেকে রােগমুক্ত বীজ টিউবার বা প্রত্যয়িত বীজ ব্যবহার করা।
ভাইরাস প্রতিরােধী জাত চাষ করা।
মাঠ তদারকি করা এবং রােগাক্রান্ত গাছ
সংগ্রহ করে ধ্বংস করা
আগাছা দমন করা এবং ভাইরাসের পােষক ও জাবপােকার খাদ্য গাছপালা ধ্বংস করা।
আক্রান্ত গাছ টিউবার সহ তুলে ফেলা (রােগিং)।
জৈব দমন ব্যবস্থাপনাঃ
ভাইরাসের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, কিন্তু
শিকারী ও পরজীবী পােকা ব্যবহার করে
জাবপােকার সংখ্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে । লেডিবার্ড ,
সােলজার বিটেল,
লেসউইং ও অন্যান্য কিছু উঁশ জাতীয় পােকা এবং
মাছি, বয়স্ক জাবপােকা এবং লার্ভাকে ভক্ষণ করে।
পরজীবি বােলতাও ব্যবহার করা যেতে পারে ইত্যাদি।
সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরােধের ব্যবস্থা নিন।
রাসায়নিক দমন ব্যবস্থাপনাঃ
ভাইরাসজনিত রােগের রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণও সম্ভব
নয়। যা'হােক, জাবপােকার সংখ্যা স্বল্প মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
উদাহরণস্বরূপ ফসলের বৃদ্ধির
প্রথম পর্যায়ে নিওনিকোটিনাইল (neonicotinyl)
কীটনাশক প্রয়ােগ করুন।
আরও জানতে- ছত্রাকনাশক গ্রুপ সম্পর্কে
অথবা
কীটনাশক (এজেড্রিন, নোভাক্রন, মেনোড্রিন ইত্যাদি) ২ মিলি অথবা ১ মিলি ডাইমেক্রন
বা ডেল্টামেথ্রিন (যেমন; ডেসিস) জাতীয় কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে
৭-১০ দিন পর পর জমিতে সেপ্র করতে হবে। আক্রান্ত গাছ টিউবারসহ তুলে ফেলতে হবে।
অথবা
ইমিডাক্লোপ্রিড,ডাইমেথোয়েট,এসিফেট,ডায়াজিনন,গ্রুপের কীটনাশক যেমনঃএডমায়ার,
টিডাে,ইমিটাফ ইত্যাদি।
যোগাযোগঃ
কৃষি বিষয়ক যে কোন সমস্যার সমাধান ও ফসলের রােগবালাই এবং পােকামাকড় দমনে সঠিক
পরামর্শ দিতে আপনার পাশে রয়েছে ekrishi24.অথবা নিকটস্থ “কৃষক তথ্য ও পরামর্শ
কেন্দ্র (ফিয়াক)” অথবা “উপ সহকারী কৃষি অফিসার” এর সাথে যোগাযোগ করুন।