শীতকালীন আগাম টমেটো চাষ পদ্ধতি | টমেটো চাষ
শীতকালীন / বর্ষাকালীন ও আগাম টমেটো চাষ পদ্ধতি
টমেটো সুস্বাদু ও উচ্চ পুষ্টি গুণে ভরা একটি সবজি। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন
সি, ফলিক এসিড, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।তাছাড়া এতে আছে বেটা কেরোটিন নামক এক প্রকার
ভিটামিন যা রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা করে। আরো আছে আমিষ, শর্করা, খনিজ পদার্থ এবং
অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। ভেষজ গুণসমৃদ্ধ টমেটোতে ক্যান্সার প্রতিরোধী
উপাদান রয়েছে। দৈনিক একটি করে টমেটো খেলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৬০
ভাগ কমে যায়।
|
|
| শীতকালীন / আগাম টমেটো চাষ পদ্ধতি | টমেটো চাষ |
তাই চিকিৎসকরা সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য টমেটো খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই
আমাদের চাহিদা পূরণের জন্য টমেটোর চাষ করা উচিৎ। টমেটো মূলত শীতকালীন সবজি হলেও
বর্তমানে ১২ মাসই টমেটো চাষ হয়ে থাকে। টমেটোর মৌসুমে টমেটোর দাম খুব কম হলেও
বছরের অন্যান্য সময় টমেটোর দাম থাকে বেশি।এবং বিঘাপ্রতি ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা মুনাফা
অর্জন করা যায়।এবার জেনে নিন টমেটোর চাষ কিভাবে করবেন।
আরও জানতে নিছে ক্লিক করুন
মাটির বৈশিষ্ট্যঃ
আলো-বাতাসযুক্ত উর্বর দো-আঁশ মাটি টমেটো চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো। তবে উপযুক্ত
পরিচর্যা করা হলে বেলে দো-আঁশ থেকে এঁটেল দো-আঁশ সবরকম মাটিতেই টমেটোর ফলন প্রায়ই
ভালো হয়। মাটির অম্লতা ৬-৭ হলে ভালো। মাটির অম্লতা বেশি হলে জমিতে চুন প্রয়োগ করা
দরকার।
বীজতলা তৈরির সময় / মৌসুমঃ
টমেটো দীর্ঘমেয়াদী একটি ফসল। বীজ বোনা থেকে শুরু করে গাছের প্রথম ফল পাকা পর্যন্ত
কমপক্ষে ১০০ দিন লাগে এবং ফলধারণ জাতভেদে ৩০-৬০ দিন স্থায়ী হয়। এ জন্য রবি
মৌসুমের অনুকূল আবহাওয়ার সম্পূর্ণ সুযোগ নিতে হলে মৌসুম আসার আগেই চাষের আয়োজন
করতে হবে।
বর্ষাকালের চাষের জন্য এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত এবং আগাম জাতের
ক্ষেত্রে জুলাই থেকে আগস্ট মাস এবং শীতকালীন চাষের জন্য সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর
মাস পর্যন্ত চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলায় বীজ বপন করতে হয়।
বীজতলার বীজ শোধন:
টমেটো চাষ করা হয় চারা তৈরি করে। এজন্য বীজতলায় বীজ বুনে সেখানে চারা তৈরি করে
নিতে হয়।
চারা তৈরির মাধ্যমে টমেটো চাষ করা হয়।তাই বীজতলায় বীজ বুনে চারা তৈরি করে নিতে
হয়।সফলতার সাথে টমেটো চাষেের জন্য কেনা বীজ বা ঘরে রাখা বীজ প্রথমে শোধন করে নিতে
হয়।
বীজতলায় বীজ বোনার আগে প্রোভক্স/ব্যাভিস্টিন বা ভিটাভ্যাক্স দ্বারা বীজ
শোধন করে অংকুরোদগম পরীক্ষা করে নেয়া উচিত।
বীজ শোধন ও অংকুরোদগম পরীক্ষা না করে যদি বীজতলায় বীজ ফেলা হয় তাহলে সেসব
বীজ না গজায় বা কম গজালে কিংবা গজানো চারা রোগগ্রস্ত হতে পারে। কারণ বীজের মধ্যে
অনেকসময় রোগজীবাণু লুকিয়ে থাকে। যেমন আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট রোগ, মোজেইক
ভাইরাস, ছত্রাকজনিত ঢলেপড়া ইত্যাদি রোগের জীবাণু বীজে থাকতে পারে।
বীজতলার মাটি শোধন:
মাটিতে বীজ ফেলার পর পানি পেয়ে বা মাটিতে থাকা রোগজীবাণু সক্রিয় অনেক সময়
হয়ে ওঠে। যার ফলে চারা মারা যায়। যেমন চারা ধ্বসা বা ড্যাম্পিং অফ রোগের জীবাণু।
এসব রোগজীবাণুও চারাকে আক্রমণ করতে পারে। সেজন্য বীজতলার মাটিও শোধন করে নিলে ভাল
হয়।
বীজতলা তৈরিঃ
চারা তৈরির দুই মাস আগে বীজ বপনের জন্য বীজতলা তৈরির প্রস্তুতি নিতে হবে। বীজতলায়
নির্দিষ্ট পরিমাণ জৈব সার এবং নিম্ন লিখিত হারে অন্যান্য সার এবং রাসায়নিক পদার্থ
প্রয়োগ করতে হবে।
টমেটোর জাত নির্বাচনঃ
টমেটো চাষের জন্য জাত নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে মৌসুম অনুযায়ী
ভালো ফলন পাওয়ার জন্য চাষযোগ্য টমেটো জাতসমূহকে মোটামুটিভাবে নিম্নলিখিত
শ্রেণীসমূহে ভাগ করা যেতে পারেঃ
আগাম জাতঃ
এসব জাত শীতকালেই হয়, তবে আগাম ফলে। আগাম জাতসমূহের বীজ বপন করা হয় জুলাই থেকে
সেপ্টেম্বর মাসে। আগাম জাতসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাত হল বারি টমেটো ৪, বারি
টমেটো ৫, রোমা ভিএফ, রোমারিও, টিপু সুলতান, গ্রেট পেলে, ডেল্টা এফ ১, উন্নয়ন এফ
১, পুষারুবী, নিউ রূপালী এফ ১ ইত্যাদি।
ভরা মৌসুমী জাতঃ
শীতকালে স্বাভাবিক সময়েই এসব জাতের গাছে ফল ধরে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বীজ
বুনে অক্টোবর-নভেম্বরে এসব জাতের টমেটোর চারা রোপণ করতে হয়। অধিকাংশ জাতই শীতকালে
ফলে। এসব জাতের মধ্য থেকে মানিক, রতন, বারি টমেটো ৩, বারি টমেটো ৬, বারি টমেটো ৭,
বারি টমেটো ৯, বাহার, মহুয়া ইত্যাদি।
নাবি শীত মৌসুমী জাতঃ
এসব জাতের বীজ বুনতে হয় জানুয়ারিতে, ফল পাওয়া যায় মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত। বাহার,
রোমা ভিএফ, রাজা, সুরক্ষা ইত্যাদি জাত নাবি চাষের জন্য ভাল।
সারা বছর চাষের উপযোগি জাতঃ
বছরের যে কোন সময় টমেটোর বীজ বুনলে চারা ও সেসব চারা লাগালে গাছ হয় সত্য, এমনকি
সেসব গাছে ফুলও আসে। কিন্তু সব জাতের গাছে ফল ধরে না। এজন্য সারা বছর চাষের
উপযোগি জাত যেমন বারি টমেটো ৬ (চৈতী) চাষ করা যায়।
বীজতলায় বীজ বপনঃ
সুস্থ সবল চারা উৎপাদনের জন্য বেলে দোঁ-আশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। প্রথমে ১০ গ্রাম
মানসম্মত ভাল বীজ ঘন করে প্রতিটি বীজতলায় (বীজ তলার আয়তন হবে দৈর্ঘ্য ১ মিটার ও
প্রস্থ ৩ মিটার) বুনতে হয়।এই হিসেবে প্রতি হেক্টরে (প্রায় ২৫০ শতক) ২০০ গ্রাম (১
গ্রাম/শতাংশ) বীজ বুনতে (গজানোর হার ৮০%) ২০টি বীজতলার প্রয়োজন হতে পারে।
বীজতলায় প্রতি ইঞ্চিতে ৪০-৬০টি ছিদ্রযুক্ত নাইলন নেট দিয়ে ঢেকে চারা উৎপাদন করতে
পাড়লে চারা অবস্থায়ই সাদা মাছিপোকার কারণে পাতা কোঁকড়ানো ভাইরাস রোগ ছড়ানোর হাত
থেকে নিস্তার পাওয়া যেতে পারে। এবং সুস্থ সবল ও ভাইরাসমুক্ত চারা রোপণ করে ভালো
ফলন পাওয়া যায়।অতিরিক্ত বৃষ্টি ও রোদের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে পলিথিন ও
চাটাই এর আচ্ছাদন ব্যবহার করা যেতে পারে।
টমেটো চাষের জমি তৈরি এবং সার প্রয়োগঃ
টমেটো গাছ মাটি থেকে প্রচুর পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। যদি গাছ বৃদ্ধির
প্রাথমিক পর্যায়ে খাদ্যের অভাব তাহলে গাছ দ্রুত বাড়ে না এবং পরবর্তী পর্যায়ে
খাদ্যের ঘাটতি হলে ফলণ অনেক কমিয়ে যায়। মাটি পরীক্ষা করে জমির চাহিদা অনুযায়ী সার
প্রয়োগ করাই সবচেয়ে উত্তম। তাই টমেটো চাষের জন্য প্রতি শতাংশ জমিতে যে সারের
দরকার হয় তা হলোঃ
টমেটো চাষের জন্য তিন থেকে চারটি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হয়। শেষ চাষের
আগে নির্ধারিত পরিমাণ গোবর সারের অর্ধেক এবং পুরো টিএসপি সার ছিটিয়ে দিয়ে
পুনরায় চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। বাকি অর্ধেক গোবর চারা লাগানোর সময়
গোড়ায় মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া ও পটাশ সার সমান তিন ভাগে ভাগ করে
তিনবারে উপরি প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম ভাগ চারা রোপণের ১০-১৫ দিন পর, দ্বিতীয় ভাগ
চারা রোপণের ২৫-৩০ দিন পর, তৃতীয় ভাগ চারা রোপণের ৪০-৪৫ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে
হবে।
টমেটোর চারা রোপণঃ
চারার বয়স ২০-২৫ দিন অথবা ৪-৬ পাতা হলে মূল জমিতে রোপণ করতে হবে।বীজতলা থেকে চারা
অত্যন্ত যত্ন সহকারে তুলতে হবে যাতে চারা শিকড় ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সে জন্য চারা
তোলার আগে বীজতলার মাটি ভিজিয়ে নিলে ভালো হবে।
চারা রোপণের আগে উপড়ে তোলা চারাগাছটির গোড়ায় (শিকড়) ২% ইউরিয়া +২% বোরিক এসিড
দ্রবণে ডুবিয়ে নিলে চারা গাছটি তাৎক্ষণিকভাবে খাবার পায়। ফলে পাতা হলুদ বা বিবর্ণ
হয় না।
জমি চাষ সম্পন্ন হলে ভূমি হতে ১০-১৫ সেমি উঁচু ১ মিটার চওড়া বেড তৈরি করে প্রতি
বেডে দুই লাইন করে চারা রোপণ করতে হবে। এবং লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব হবে ৬০ সেমি.
ও প্রতি লাইনে চারা থেকে চারা ৬০ সেমি. দূরত্বে লাগাতে হবে।টমেটোর চারা রোপণ করার
ক্ষেত্রে চারাগুলো ত্রিভূজ আকৃতিতে লাগাতে হবে।বিকেলের পড়ন্ত রোদে চারা রোপণ করাই
উত্তম এবং লাগানোর পর টমেটোর গাছের গোড়ায় হালকা সেচ প্রদান করতে হয়।অতঃপর বেডের
চারপাশে ড্রেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের
জন্য ড্রেন/নালার পরিমিতি চওড়া (৩০-৪০ সেন্টিমিটার) এবং এক দিকে সামান্য ঢালু
হওয়া দরকার।
টমেটোর জমিতে সেচ ও নিষ্কাশনঃ
চারা রোপণের ৩-৪ দিন পর্যন্ত হালকা সেচ ও পরে প্রতি কিস্তিতে সার উপরি প্রয়োগের
পর জমিতে সেচ দিতে হয়। গ্রীষ্ম মৌসুমে টমেটো চাষের জন্য ঘন ঘন সেচের প্রয়োজন হয়।
বর্ষা মৌসুমে তেমন একটা সেচের প্রয়োজন হয় না। টমেটো গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে
না।
তাই সেচ অথবা বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য নালা পরিমিতি চওড়া
(৩০-৪০ সেন্টিমিটার) এবং এক দিকে সামান্য ঢালু হওয়া দরকার। সেচ দেওয়ার সময় খেয়াল
রাখতে হবে, সেচের পানি কখনোই যেন বেডের উপর উঠে না আসে। নালাতে সেচ দিতে হবে,
নালা থেকে শোষণের মাধ্যমে বেড ও গাছ পানি সংগ্রহ করতে হবে।
টমেটোর জমিতে ছায়াদানের ব্যবস্থাঃ
সূর্যের প্রখরতা থেকে চারা গাছকে বাঁচানোর জন্য ছায়াদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
টমেটোর জমিতে মালচিংঃ
প্রতিটি সেচের পরে মাটির উপরি ভাগের চটা বা চাকামাটি ভেঙে দিতে হবে যাতে মাটিতে
পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে।
টমেটোর জমিতে আগাছা দমনঃ
চারা লাগানোর পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী দিয়ে জমির মাটি ঝুরঝুর করে দিতে হবে
এবং হাল্কাভাবে আগাছাগুলো পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
টমেটোর জমিতে বিশেষ পরিচর্যাঃ
⛱️ গাছ যাতে অত্যধিক ঝোপালো না হয় সে জন্য প্রয়োজনে অতিরিক্ত ডালপালা ছাঁটাই
করা উচিত।
⛱️ প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির সার প্রয়োগের আগে প্রথম ফুলের গোছার ঠিক নিচের
কুশিটি ছাড়া নিচের সব পার্শ্বকুশি ছেঁটে দিতে হবে।এতে পোকামাকড় ও রোগের আক্রমণ
কম হয় এবং ফলের আকার ও ওজন বৃদ্ধি পায়।
⛱️ ভালো ফলন ও নিখুঁত ফল পেতে টমেটো গাছে বাউনিয়া দেয়া বা গাছে বাঁশের খুঁটি দিয়ে
ঠেকনা দিতে হবে।
⛱️ পাশাপাশি দুইটি সারির মধ্যে ‘অ’ আকৃতির বাঁশের ফ্রেম তৈরি করে দিলে টমোটোর ফলন
বৃদ্ধি পায়।
⛱️ টমেটোর ভালো ফলনের জন্য রোগ ও পোকামাকড় দমনের দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে।
টমেটোর রোগ
কৃমি রোগ, গোড়া পচা রোগ,ধ্বসা রোগ, টমেটো মোজাইক ভাইরাস এবং ফিউজেরিয়াম উইল্ট।
ঢলে পড়া রোগে গাছে ফুল আসার আগেই ঢলে পড়ে।
টমেটোর পোকা
টমেটোর ফল ছিদ্রকারী পোকার,শোষক পোকা এবং জাবপোকা গাছের রস শোষণ করে।
ফসল তোলাঃ
জাত ও লাগানোর সময়ের উপর নির্ভর করে ২-৪ মাসের মধ্যেই ফসল তোলার সময হয়।টমেটো
পাকা ও কাঁচা উভয়ই অবস্থায়ই তোলা যায়। তবে দূরে পাঠানোর জন্য একেবারে পাকা টমেটো
তোলা উচিত নয়।
ফলের নিচের ফুল ঝরে যাওয়ার পর যে দাগ থাকে ঐ স্থান থেকে লালচে ভাব শুরু হলেই
বাজারজাতকরণের জন্য ফল সংগ্রহ করতে হবে। এতে ফল অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
অপরিপক্ব অবস্থায় ফল তুলে হরমোন প্রয়োগ করে ফল পাকানো হলে ফলের স্বাভাবিক স্বাদ ও
পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং ফলনও কম হয়। তাই এভাবে ফলন সংগ্রহ ও ফল পাকানো মোটেই
ঠিক নয়।
রঙিন নয় এরূপ টমেটো ১০ থেকে ১৫.৫০ সে. তাপে ৩০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
পাকা টমেটো ৫০০ সে. তাপে ১০ দিন পর্যন্ত রাখা যায়।
জাতভেদে চারা লাগানোর ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে পাকা টমেটো সংগ্রহ করা যায়। টমেটো
পাকা ও কাঁচা উভয় অবস্থাতেই সংগ্রহ করা যায়। প্রতি গাছ থেকে ৭-৮ বার টমেটো
সংগ্রহ করা যায়।
টমেটোর জীবনকালঃ
জাতভেদে টমেটোর জীবনকাল ১০০-১২০ দিন হয়ে থাকে।
টমেটোর ফলনঃ
জাতভেদে টমেটোর ফলন শতাংশে ৮০ থেকে ১০০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।এবং সঠিক পরিচর্যা
করলে একরে ১৫-৫০ টন/ ও হেক্টর প্রতি ৫০-৭০ টনের বেশি টমেটো পাওয়া সম্ভব।
টমেটোর বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ:
টমেটোর জমি থেকে পাকা ফল তুলে ঘরে ২-৩ দিন রাখতে হবে যাতে ফলগুলো নরম হয়। নরম
হওয়ার পর দু’ভাগে কেটে বীজগুলো একটি শুকনো কাচের অথবা প্লাস্টিকের পাত্রে ২৪-৪৮
ঘন্টা রেখে দিতে হবে। এর পর বীজগুলো পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে রোদে
শুকিয়ে কাচ বা প্লাস্টিকের পাত্রে মুখ ভালভাবে বন্ধ করে সংরক্ষণ করতে হবে।
টমেটোর বাজার সম্ভাবনাঃ
টমেটো হচ্ছে একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। কচি ও পাকা টমেটো সালাদ তৈরি ও
বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া টমেটো দিয়ে সুস্বাদু সস, কেচাপ
ইত্যাদি তৈরি করা হয়। তাই টমেটোর চাহিদা সব সময়ই থাকে বিধায় এর চাষ করে
পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাড়তি আয় করা সম্ভব হয়।এবং দেশের
চাহিদা মেটানোর পর অতিরিক্ত উৎপাদন বিদেশে রপ্তানি করে বিদেশি মুদ্রা অর্জন করে
দেশের অর্থনীতি সচল রাখা যায়।
যোগাযোগঃ
কৃষি বিষয়ক যে কোন সমস্যার সমাধান ও ফসলের রােগবালাই এবং পােকামাকড় দমনে সঠিক
পরামর্শ দিতে আপনার পাশে রয়েছে ekrishi24.অথবা নিকটস্থ “কৃষক তথ্য ও পরামর্শ
কেন্দ্র (ফিয়াক)” অথবা “উপ সহকারী কৃষি অফিসার” এর সাথে যোগাযোগ করুন।