টমেটোর আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট রোগ (Early Blight of Tomato) এর দমন ও পরিচিতি | টমেটোর রোগ

টমেটোর আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট রোগ (Early Blight of Tomato) এর দমন ও পরিচিতি


টমেটো বাংলাদেশের একটি অতি প্রয়োজনীয় সবজির নাম।এটি উৎপাদন করে দেশের চাহিদা পূরনের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু এটি উৎপাদন করতে অনেক রোগের সমুখীন হতে হয়।যেমন-কৃমি রোগ, গোড়া পচা রোগ,ধ্বসা রোগ, টমেটো মোজাইক ভাইরাস এবং ফিউজেরিয়াম উইল্ট। ঢলে পড়া রোগে গাছে ফুল আসার আগেই ঢলে পড়ে ইত্যাদি। এর মধ্যে অন্যতম রোগ হল টমেটোর আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট রোগ (Early Blight of Tomato) রোগ। আজ আমরা এ রোগের সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

টমেটোর আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট রোগ (Early Blight of Tomato) এর দমন ও পরিচিতি |টমেটোর রোগ
 টমেটোর আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট রোগ (Early Blight of Tomato) এর দমন ও পরিচিতি | টমেটোর রোগ




রোগের পরিচিতিঃ 

টমেটোর আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট (Early Blight of Tomato) রোগ Alternaria solani নামক ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয়। টমেটো ফসলের বাড়ন্ত ও পূর্ণ বয়স্ক ,ফলের বাড়ন্ত ও পরিপক্ব পর্যায়ে এবং টমেটোর পাতায় ও   
আক্রমণ করে।

আরও জানতে নিছে ক্লিক করুন 


টমেটো রোগের লক্ষণঃ

 টমেটোর আগাম ধ্বসা  এটি বীজবাহিত রোগ এবং এ রোগের জীবাণু মাটিতে ও আগাছার মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বেঁচে থাকতে পারে। পরে সেখান থেকে বাতাস, পানি ইত্যাদির মাধ্যমে টমেটোর জমিতে বিস্তার লাভ করে।

 টমেটোর আর্লি ব্লাইট রোগের আক্রমণে  গাছ হলদে হওয়া, পাতা ঝরে পড়া এবং অকালে গাছ মরে যাওয়া এ রোগের লক্ষণীয় উপসর্গ। তাছাড়া
পাতা ও ফল আক্রান্ত হলে পাকার আগেই ঝড়ে পড়ে।

টমেটোর গাছের নিচের পাতায় ছোট ছোট বাদামি রঙের অল্প বসে যাওয়া কৌনিক দাগ পড়ে।আক্রান্ত অংশে সামান্য বাদামি দাগের সাথে পর্যায়ক্রমে কালচে রংয়ের গোল গোল বড় দাগ পড়ে। পাতার বোঁটা ও কান্ডের দাগ অপেক্ষাকৃত লম্বা হয়। 

টমেটোর বয়স্ক গাছের পাতায় এ রোগের লক্ষণ প্রথম দেখা যায়। আক্রান্ত গাছের পাতার উপর কাল বা বাদামী রংয়ের বৃত্তাকার দাগ পড়ে।

 টমেটোর পাতার মত কাণ্ডে ও ফলে অনুরূপ কুঁচকানো বাদামী থেকে কালো রঙের বৃত্তাকার দাগ সৃষ্টি হয় এবং আক্রান্ত ফল পাকার আগেই ঝরে পড়ে।


সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনাঃ


প্রোভে  বা ভিটাভে -২০০ (প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম) দিয়ে টমেটোর বীজ শোধন করে বপন করা।

যেখানে এ রোগ নিয়মিত ও বেশী হয় সেখানে রোপন সময় পরিবর্তন করে সম্ভব হলে শুষ্ক মৌসুমে এই ফসল চাষ করা।

রোগমুক্ত গাছ বা উৎস থেকে টমেটোর বীজ সংগ্রহ  করে ব্যবহার করা।এবং শস্য পর্যায় অবলম্বন করা।

পাতা বেশী সময় ধরে ভেজা থাকলে এ রোগের জীবাণু বৃদ্ধি পায়। তাই ঝরনা সেচ না দেয়া।

 অনুমোদিত ছত্রাক নাশক যেমন- রোভরাল ২ গ্রাম ১ লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে ১৫ দিন অন্তর স্প্রে করা।

এই ফসলের অন্যান্য রোগসমূহ


ব্যবস্থাপনাঃ

পাতায় ২/১টি দাগ দেখার সাথে সাথে অনুমোদিত ছত্রাক নাশক যেমন-প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম আইপ্রোডিয়ন বা মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: রোভরাল ১ মিলি বা ডাইথেন এম-৪৫ ২ গ্রাম, প্রতিলিটার পানিতে মিশিয়ে ১২ দিন পরপর স্প্রে করা ।স্প্রে করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন।



সাবধানতাঃ

১। সুস্থ, সবল ও রোগ সহনশীল জাত চাষ করা ।
২।আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।
৩। আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না। ৪। একই জমিতে বার বার টমেটো চাষ করবেন না 
৫। নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করুন।
৬। সুষম সার প্রয়োগ করুন।


অন্যান্যঃ টমেটো ক্ষেতের পাশে আলু চাষ করা থেকে বিরত থাকুন।

সতর্কতাঃ সকল বালাইনাশকই বিষ। তাই বালাইনাশক ব্যবহারের পূর্বে এবং সংরক্ষণের সময় প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করুন। অতিরিক্ত মাত্রায় বালাইনাশক ব্যবহার স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

যোগাযোগঃ

কৃষি বিষয়ক যে কোন সমস্যার সমাধান ও ফসলের রােগবালাই এবং পােকামাকড় দমনে সঠিক পরামর্শ দিতে আপনার পাশে রয়েছে ekrishi24.অথবা নিকটস্থ “কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র (ফিয়াক)” অথবা “উপ সহকারী কৃষি অফিসার” এর সাথে যোগাযোগ করুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url